সম্মান

সবসময় নিজের সম্মান রক্ষা করতে এই কাজগুলো করুন

আপনার কি মনে হয়, আপনি যে সম্মান পাওয়ার যোগ্য তা অন্যরা আপনাকে দিচ্ছে না? আপনি কি বিশ্বাস করেন, সম্মান অর্জনই জীবনের অন্যতম বড় সাফল্য? যদি আপনার উত্তর ‘হ্যাঁ’ হয়, তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য। আসুন, এক নজরে দেখে নেওয়া যাক অন্যদের চোখে সম্মান ও সমীহ অর্জনের সহজ কিছু উপায়।

১. সংযতভাবে কথা বলুন: হুট করে কোনো মন্তব্য করবেন না। বেশি শুনুন এবং অন্যের কথা মনোযোগ দিয়ে শোনার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

২. নাম মনে রাখুন: মানুষ তার নাম শুনতে ভালোবাসে। তাই পরিচিতদের নাম মনে রাখুন এবং নাম ধরে ডাকুন।

৩. গোপনীয়তা রক্ষা করুন: কেউ আপনাকে কোনো তথ্য গোপন রাখতে বললে, সেটি যেকোনো মূল্যে গোপন রাখুন।

৪. প্রশংসা ও সমালোচনার ভারসাম্য বজায় রাখুন: পেছনে প্রশংসা করুন, তবে গঠনমূলক সমালোচনা সামনে করুন।

৫. অন্যদের সহায়তা করুন: অন্যের উন্নতিতে সাহায্য করুন ও অনুপ্রাণিত করুন। প্রকৃত নেতারা এভাবেই সম্মান অর্জন করেন।

৬. বিনয়ী আচরণ করুন: সবার আগে খাবার নেওয়ার পরিবর্তে অন্যদের আগে পরিবেশন করুন বা শেষে নিজের জন্য নিন।

৭. দৃষ্টি সংযোগ বজায় রাখুন: যেকোনো কথোপকথনের সময় মোবাইল ফোন দূরে রাখুন। চোখে চোখ রেখে কথা বলুন এবং মনোযোগ দিন।

৮. ধীরস্থিরভাবে উত্তর দিন: কোনো প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার আগে ৩ সেকেন্ড সময় নিন। এতে আপনার জবাব আরও প্রভাবশালী হবে।

৯. সহযোগিতামূলক হন: পার্টি বা খাবারের পর টেবিল পরিষ্কার করতে সাহায্য করুন।

১০. বিনয়ের প্রকাশ করুন: কেউ ঘরে ঢুকতে চাইলে দরজা খুলে দিন এবং অপেক্ষা করুন সে ঢোকার পর দরজা বন্ধ করতে।

১১. প্রতিশ্রুতি রক্ষা করুন: কথা দেওয়ার সময় কম বলুন, তবে প্রত্যাশার চেয়ে বেশি দিন।

১২. সময়নিষ্ঠ হন: যেকোনো জায়গায় সময়মতো উপস্থিত হন।

১৩. সততা বজায় রাখুন: জীবনসঙ্গী, বন্ধু, পরিবার ও কাজের প্রতি শতভাগ সৎ থাকুন।

১৪. মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকুন: একমত না হলেও অন্যের মতামতকে সম্মান করুন।

১৫. নিজের দায়িত্ব পালন করুন: যখন কেউ দেখছে না, তখনো মনোযোগ দিয়ে কাজ করুন।

১৬. সৌজন্যতাবোধ বজায় রাখুন: ‘প্লিজ’, ‘সরি’, ‘থ্যাংক ইউ’—এই শব্দগুলোর যথাযথ ব্যবহার আপনাকে আরও সম্মানিত করবে।

১৭. নিজের ভুল স্বীকার করুন: ভুল বুঝতে পারার সঙ্গে সঙ্গেই তা স্বীকার করুন এবং সংশোধনের চেষ্টা করুন।

১৮. প্রতিক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করুন: মানুষ কী করল তা নয়, বরং আপনি কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানালেন, সেটাই আপনাকে সংজ্ঞায়িত করে। নেতিবাচক আচরণের প্রতিক্রিয়া হিসেবেও ইতিবাচক থাকুন।

১৯. প্রতিক্রিয়াশীল নয়, দায়িত্বশীল হোন: তাৎক্ষণিক রিঅ্যাক্ট না করে চিন্তাভাবনা করে উত্তর দিন। নেতিবাচক অনুভূতিগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে শিখুন।

২০. ব্যক্তিগত সীমানা নির্ধারণ করুন: আপনার তথ্য বা অনুভূতি শেয়ার করার আগে ভাবুন, আপনি বেশি প্রকাশ করছেন কি না।

২১. ইতিবাচক মনোভাব বজায় রাখুন: যেকোনো পরিস্থিতি ইতিবাচকতা এবং আত্মবিশ্বাস দিয়ে মোকাবিলা করুন।

২২. নিজেকে সম্মান করুন: সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো—নিজেকেই প্রথমে সম্মান করুন। নিজের নৈতিক মানদণ্ড বজায় রাখুন এবং প্রতিনিয়ত নিজের উন্নত সংস্করণ তৈরি করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যান।

পরিশেষে বলা যায়, সম্মান অর্জন করা আসলে কঠিন কিছু নয়। কিছু বিষয় মাথায় সবসময় রাখতে হবে। আপনি যতো বড়ই হোন না কেন, আপনি যদি স্তরভেদে প্রতিটি মানুষকে সমান মর্যাদা দিতে পারেন তবেই আপনি সম্মানিত। অনেক মানুষ আছে যারা অনেক দাম্ভিকতার পরিচয় দেয় পদে পদে। তাদের মানুষ সামনে সম্মান দেখালেও পেছনে মূলত বদনামই করে। মানুষ হিসেবে সেরকম সম্মান কামনা আমাদের কারোর-ই কাম্য নয়। আসুন, সবাই সৎ থাকি, কেউ কাউকে হিংসা না করি, বড়াই না করি। তবেই আমরা সবাই সমাজে সম্মানিত হবো।

আরও পড়ুন: ঝিনাইদহের শৈলকুপায় তিনজনকে গুলি করে হত্যা

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *