ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে এক ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় ৪ জন নিহত এবং ১৫ জন আহত হয়েছেন। শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে শ্রীনগরের হাঁসাড়া এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের তীব্রতায় ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান দুইজন, পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আরও দুইজন।
ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ
স্থানীয় সূত্র ও পুলিশের বরাতে জানা যায়, যশোর থেকে ঢাকামুখী “হামদান এক্সপ্রেস” নামের একটি বাস বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাকের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। বাসটি রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার জন্য যাত্রীদের নিয়ে যাচ্ছিল। সংঘর্ষের প্রচণ্ড আঘাতে বাসের সামনের অংশ সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়, যার ফলে চালকসহ বেশ কয়েকজন যাত্রী গুরুতর আহত হন।
হতাহতের সংখ্যা ও চিকিৎসা
নিহত: ৪ জন (ঘটনাস্থলে ২ জন, হাসপাতালে ২ জন)
আহত: ১৫ জন (সকলকে শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে)
আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। প্রয়োজনে তাদের ঢাকার বিশেষায়িত হাসপাতালে স্থানান্তর করা হতে পারে।
দুর্ঘটনার সম্ভাব্য কারণ
প্রাথমিক তদন্তে দুর্ঘটনার জন্য নিম্নলিখিত কারণগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে:
চালকের বেপরোয়া গতি ও অসতর্কতা
ট্রাক চালকের রাস্তার ভুল দিক দিয়ে যাত্রা
রাতের অন্ধকারে দৃষ্টিসীমা সীমিত থাকা
যানবাহনের ফিটনেস সংক্রান্ত ত্রুটি
পুলিশ জানিয়েছে, উভয় যানের চালক ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গেছেন। হাঁসাড়া হাইওয়ে থানার ওসি আব্দুল কাদির জিলানী বলেন, “মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু হয়েছে। দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।”
বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনা: একটি চলমান সংকট
গত কয়েক বছরে বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে। বিশেষজ্ঞরা এর জন্য দায়ী করছেন:
✅ ফিটনেসবিহীন গাড়ির অনিয়ন্ত্রিত চলাচল
✅ অদক্ষ ও প্রশিক্ষণবিহীন ড্রাইভার
✅ ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনে শিথিলতা
✅ সড়ক নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বল তদারকি
সড়ক দুর্ঘটনা রোধে করণীয়
স্পিড লিমিট কঠোরভাবে প্রয়োগ করা।
ড্রাইভারদের জন্য বাধ্যতামূলক প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করা।
গাড়ির নিয়মিত ফিটনেস পরীক্ষা বাস্তবায়ন করা।
ট্রাফিক পুলিশের নজরদারি বাড়ানো।
সড়ক অবকাঠামো উন্নয়ন ও রাতের আলোর ব্যবস্থা জোরদার করা।
শোক ও সমবেদনা
এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারের প্রতি আমরা গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি।
আরও পড়ুন: সারা দেশে পুলিশের ব্যাপক অভিযান: ২৪ ঘণ্টায় গ্রেপ্তার ১,৬১৬ জন
পাঠকদের জন্য প্রশ্ন
আপনার কী মনে হয়? সড়ক দুর্ঘটনা রোধে আর কী কী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত? নিচে কমেন্টে আপনার মতামত জানান।
সতর্কতা: এই প্রতিবেদন স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্য অনুযায়ী তৈরি। কোনো তথ্যগত ভুল থাকলে দয়া করে আমাদের জানান।