রাজবাড়ীতে এক কিশোরীকে ধর্ষণ ও লুটের ঘটনায় অভিযুক্ত গ্রেপ্তার
রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে এক মর্মস্পর্শী ঘটনায় এক কিশোরীকে ধর্ষণ করে তার নগদ অর্থ ও স্বর্ণালংকার লুটের অভিযোগ উঠেছে। পুলিশের তৎপরতায় ঘটনার অভিযুক্ত সুদীপ্ত হালদার (৪২) ওরফে সুমনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ঘটনার বিস্তারিত
গত ২৬ মে রাতে রাজবাড়ী পুলিশ অভিযান চালিয়ে বাগেরহাটের রামপাল থানার বেদকাটা গ্রাম থেকে অভিযুক্ত সুমনকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, প্রায় দুই মাস আগে মুঠোফোনে একটি অপরিচিত নম্বর থেকে সুমনের সঙ্গে ওই কিশোরীর পরিচয় হয়। সুমন নিজেকে একজন সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দিয়ে তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন।
অভিযোগ রয়েছে, সুমন তাকে বিয়ের মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষণ করেন। এরপর গত ২২ মে রাতে কৌশলে কিশোরীর বাড়িতে প্রবেশ করে তাকে আবারও ধর্ষণ করেন। পরে রাতের অন্ধকারে কিশোরীর পরিবারের সঞ্চিত অর্থ ও স্বর্ণালংকার লুট করে পালিয়ে যান।
লুটের পরিমাণ ও পুলিশের তৎপরতা
ঘটনার শিকার কিশোরী ঘুম থেকে উঠে দেখেন, তার ঘরের আলমারি ভাঙা এবং সেখানে রাখা গরু কেনার জন্য প্রস্তুত আড়াই লাখ টাকা ও প্রায় ৬ লাখ টাকা মূল্যের স্বর্ণালংকার লুট হয়ে গেছে। এ ঘটনায় গত ২৪ মে বালিয়াকান্দি থানায় মামলা দায়ের করা হয়।
পুলিশ ডিজিটাল ফরেনসিক ও গোয়েন্দা তৎপরতা চালিয়ে সুমনের অবস্থান শনাক্ত করে তাকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় লুট হওয়া স্বর্ণালংকারের একটি অংশ উদ্ধার করা হয়েছে।
সমাজে নারী নিরাপত্তা ও সচেতনতা
এ ধরনের ঘটনা আমাদের সমাজে নারী ও কিশোরীদের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করে। অপরিচিত ব্যক্তির সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করা এবং অতিরিক্ত বিশ্বাস স্থাপন করা কতটা ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে, এই ঘটনা তারই ইঙ্গিত দেয়।
কীভাবে সতর্ক থাকবেন?
১. অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন বা মেসেজ এড়িয়ে চলুন।
২. সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অজানা ব্যক্তির সঙ্গে ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করবেন না।
৩. বিয়ের প্রলোভন বা চাকরির প্রস্তাব আসলে পরিবার বা বিশ্বস্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে পরামর্শ করুন।
৪. যেকোনো অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে স্থানীয় প্রশাসন বা পুলিশের সহায়তা নিন।
শেষ কথা
এই ঘটনা শুধু একটি অপরাধই নয়, আমাদের সমাজের নৈতিক অবক্ষয়েরও প্রতিচ্ছবি। আশা করা যায়, দ্রুত বিচার কাজ সম্পন্ন হয়ে ভুক্তভোগী কিশোরী ও তার পরিবার কিছুটা ন্যায়বিচার পাবে। পাশাপাশি, সমাজের সকল স্তরে নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: গাজীপুরে পোশাক শ্রমিকের উপর নৃশংস সংঘবদ্ধ ধর্ষণ: বিচার চাইছে পরিবার
সতর্ক থাকুন, সচেতন হোন এবং অন্যকেও সচেতন করুন।