সম্প্রতি সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলায় এক মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে, যা সমাজের অন্ধকার দিককে আবারও উন্মোচিত করেছে। একটি নির্দোষ শিশুকে আম খাওয়ানোর প্রলোভন দেখিয়ে নির্মমভাবে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে এক যুবকের বিরুদ্ধে। এই ধরনের ঘটনা শুনলে যে কারও রক্ত ঠান্ডা হয়ে যায় এবং প্রশ্ন জাগে—আমাদের সমাজে শিশুদের নিরাপত্তা কতটুকু নিশ্চিত?
ঘটনার বিবরণ
গত রবিবার (২৬ মে) বিকেলে কাজীপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নের মেঘাই এলাকায় এই ভয়াবহ ঘটনাটি ঘটে। অভিযুক্ত আব্দুল মজিদ মিনু (৩৬) নামের এক ব্যক্তি প্রতিবেশী হওয়ার সুযোগে একটি ছয় বছরের শিশুকে আম দেওয়ার লোভ দেখিয়ে তার বাড়ির পাশের একটি ভুট্টা ক্ষেতে নিয়ে যায়। সেখানে সে শিশুটির মুখ চেপে ধরে পাশবিক নির্যাতন চালায়।
ঘটনার পর শিশুটি কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি ফিরে তার মাকে সব ঘটনা জানায়। শিশুটির শারীরিক ও মানসিক অবস্থা খারাপ হতে থাকায় পরিবার তাকে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যায়। প্রাথমিক চিকিৎসার পরও শিশুটির অবস্থা স্থিতিশীল না হওয়ায় পুলিশ তাকে সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে মেডিকেল পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছে।
অভিযোগ দায়ের ও পুলিশের তদন্ত
বৃহস্পতিবার (৩০ মে) শিশুটির ভাই কাজীপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম জানিয়েছেন, অভিযুক্ত মজিদকে গ্রেপ্তারের জন্য তল্লাশি চলছে। একই সঙ্গে শিশুটির ডাক্তারি পরীক্ষার রিপোর্টের ভিত্তিতে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শিশু নির্যাতন: একটি সামাজিক ব্যাধি
শিশু ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধ দিন দিন বেড়েই চলেছে। প্রতিবারই এমন ঘটনায় আমরা ক্ষোভ প্রকাশ করি, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারছি না। শিশুদের সঙ্গে কীভাবে কথা বলতে হবে, তাদের নিরাপত্তা কীভাবে নিশ্চিত করা যায়—এ বিষয়ে পরিবার ও সমাজকে আরও সচেতন হতে হবে।
শিশুদের সুরক্ষায় করণীয়:
সচেতনতা বৃদ্ধি: শিশুদের ভালো-মন্দ স্পর্শ সম্পর্কে শিক্ষা দিন।
বিশ্বাসযোগ্য সম্পর্ক: শিশুরা যেন বাবা-মায়ের কাছে কোনো কথা লুকিয়ে না রাখে।
নিরাপদ পরিবেশ: শিশুকে অপরিচিত বা সন্দেহজনক ব্যক্তির সঙ্গে একা যেতে নিষেধ করুন।
দ্রুত ব্যবস্থা নিন: কোনো অস্বাভাবিক আচরণ দেখলে দেরি না করে আইনি পদক্ষেপ নিন।
শেষ কথা
এই ঘটনা আমাদের আবারও স্মরণ করিয়ে দেয় যে শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সমাজ ও প্রশাসনকে আরও কঠোর হতে হবে। অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা জরুরি, যাতে ভবিষ্যতে কেউ এমন পাশবিক কাজ করতে সাহস না পায়।
আরও পড়ুন: ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও ভিডিও ফাঁসের মামলা: বিস্তারিত জানুন
আমরা আশা করি, দ্রুততম সময়ে অভিযুক্ত গ্রেপ্তার হবে এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে। একই সঙ্গে সমাজের সব স্তরের মানুষকে শিশু সুরক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে।
আপনার মতামত জানান: শিশু নির্যাতন রোধে আপনার কী পরামর্শ আছে? কমেন্টে শেয়ার করুন।