খুলনার রূপসা উপজেলায় এক ভয়াবহ ধর্ষণের ঘটনায় স্থানীয় সম্প্রদায় হতবাক। সন্ত্রাসীর সহযোগীকে ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগে এক স্বামীর হাত-পা বেঁধে পিটিয়ে তার স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হতে হয়েছে। নিষ্ঠুর এই ঘটনায় আক্রান্ত নারীকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। পুলিশ ঘটনাটি তদন্ত করলেও এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
ঘটনার বিস্তারিত
গত রবিবার মধ্যরাতে রূপসা উপজেলার নৈহাটী ইউনিয়নের একটি গ্রামে এ হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটে। অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় তিন যুবক—মো. পারভেজ, রাতুল ও মো. মাসুদ—এক যুবককে তার বাড়ি থেকে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে যায়। তারা তার হাত-পা বেঁধে নির্মমভাবে পিটিয়ে তারপর তার স্ত্রীকে ধর্ষণ করে।
ভুক্তভোগী পরিবারের দাবি, এই নৃশংসতা সংঘটিত হয়েছে শীর্ষ সন্ত্রাসী গ্রেনেড বাবুর সহযোগী মিরাজকে যৌথবাহিনীর হাতে ধরিয়ে দেওয়ার প্রতিশোধ হিসেবে। পরিবারের সদস্যদের মতে, ধর্ষণের শিকার নারী ও তার স্বামীকে টার্গেট করে সন্ত্রাসীরা এই হামলা চালিয়েছে।
পুলিশের তদন্ত ও স্থানীয় প্রতিক্রিয়া
রূপসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহফুজুর রহমান ঘটনাটির তদন্ত চলছে বলে নিশ্চিত করেছেন। তবে এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। এই ঘটনায় এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং দ্রুত বিচার চেয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারণা শুরু করেছেন।
মানবাধিকার সংগঠনগুলোও এই নৃশংসতার নিন্দা জানিয়ে দোষীদের দ্রুত শাস্তির দাবি তুলেছেন। নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগের পাশাপাশি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
সামাজিক সুরক্ষা ও ন্যায়বিচারের দাবি
এই ঘটনা শুধু একটি ধর্ষণের ঘটনা নয়, এটি সমাজে সন্ত্রাসের বিস্তার ও নারী নিরাপত্তাহীনতার চিত্রও ফুটে তুলেছে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে কঠোর শাস্তির বিধান থাকলেও অপরাধীরা কীভাবে বারবার এমন নৃশংসতা চালাতে সাহস পায়, তা ভাবিয়ে তুলেছে সবাইকে।
এই ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে নিম্নলিখিত পদক্ষেপ জরুরি:
অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা
নির্যাতিত নারী ও তার পরিবারের জন্য আইনি সহায়তা ও সুরক্ষা প্রদান
স্থানীয় সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযান পরিচালনা
সমাজে সচেতনতা বৃদ্ধি ও নারী নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা
উপসংহার
খুলনার রূপসায় সংঘটিত এই বর্বরোচিত ঘটনা আমাদের সমাজের অন্ধকার দিকটি আবারও মনে করিয়ে দিয়েছে। নারী নির্যাতন ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে রাষ্ট্র ও সমাজকে কঠোর হতে হবে। আশা করা যায়, দোষীদের দ্রুত বিচারের আওতায় এনে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা হবে এবং ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করা সম্ভব হবে।
আরও পড়ুন: ভুয়া মেজর সেজে নারী চিকিৎসক’কে ধর্ষণ | অভিযুক্ত গ্রেফতার
আপনার মতামত জানান: নারী নিরাপত্তা ও সন্ত্রাস দমনে আপনার কী পরামর্শ আছে? কমেন্টে শেয়ার করুন।