ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো সম্পূর্ণ নিরাপদে রয়েছে—ইসরায়েলের সাম্প্রতিক বিমান হামলার পর এমনটাই দাবি করলেন দেশটির পারমাণবিক শক্তি সংস্থার প্রধান মোহাম্মদ এসলামি। বুধবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি জানান, ইসরায়েলের কয়েক দফা আক্রমণ সত্ত্বেও ইরানের পরমাণু সুবিধাগুলো কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।
ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা: শক্তিশালী ও সুরক্ষিত
এসলামি বলেন, “আমাদের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো পুরোপুরি সুরক্ষিত এবং সক্রিয় রয়েছে। আমাদের কর্মীরা তাদের দায়িত্বে অটল রয়েছেন এবং যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত।” তিনি আরও যোগ করেন, ইরানের জনগণ শক্তিশালী ও আত্মবিশ্বাসী, এবং তারা কখনই বিদেশি চাপের কাছে মাথা নত করবে না।
ইরানের এই দাবি এসেছে ইসরায়েলের সাম্প্রতিক বিমান হামলার পরিপ্রেক্ষিতে। গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ইসরায়েল ইরানের বিভিন্ন স্থানে বিমান হামলা চালায়, যার লক্ষ্যবস্তু ছিল সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনা। বিশেষ করে ইসফাহান প্রদেশের নাতাঞ্জ পারমাণবিক কেন্দ্রে হামলা চালানো হয়। প্রথমদিকে কিছু ক্ষয়ক্ষতির খবর থাকলেও ইরান এখন দাবি করছে যে তাদের পরমাণু সুবিধাগুলো অক্ষত রয়েছে।
ইসরায়েল-ইরান উত্তেজনা: পাল্টা হামলা চলছে
ইসরায়েলের হামলার জবাবে ইরানও পাল্টা আক্রমণ শুরু করেছে। ইরানি বাহিনী ইসরায়েলের দিকে ৪০০টিরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে এবং কয়েক শ’ ড্রোন পাঠিয়েছে। ইসরায়েলি সূত্রে জানা গেছে, ইরানের হামলায় এখন পর্যন্ত অন্তত ২৪ জন নিহত এবং ৮০০-এর বেশি মানুষ আহত হয়েছে।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ইতিমধ্যে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, “ইরানের কোনো আগ্রাসনই বিনা জবাবে যাবে না।” অন্যদিকে, ইরানের নেতৃত্বও স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে যে তারা যেকোনো আন্তর্জাতিক চাপ বা সামরিক হুমকিকে মোকাবিলা করতে প্রস্তুত।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিক্রিয়া
এই সংঘাতের প্রেক্ষাপটে বিশ্ব নেতারা শান্তির আহ্বান জানাচ্ছেন। জাতিসংঘ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন উভয় পক্ষকে সংযত হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। তবে ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে এই উত্তেজনা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, যা পুরো মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ।
শেষ কথা
ইসরায়েল-ইরান সংঘাত দিন দিন জটিল আকার ধারণ করছে। ইরান তার পরমাণু স্থাপনা অক্ষত থাকার দাবি করলেও এই সংঘাতের ভবিষ্যৎ এখনও অনিশ্চিত। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের হস্তক্ষেপ ও কূটনৈতিক আলোচনা ছাড়া এই সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধান কঠিন বলে মনে করা হচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে বিশ্ববাসীর চোখ এখন মধ্যপ্রাচ্যের দিকে। উত্তেজনা আরও বাড়বে নাকি শান্তির পথে ফিরবে ইসরায়েল-ইরান—তা সময়ই বলবে।
আরও পড়ুন: করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জরুরি নির্দেশনা – যা জানা জরুরি