বিএনপি চেয়ারপারসনের ঐতিহাসিক ভাষণে গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচারের দাবি
গত জুলাই মাসে সংঘটিত গণ-আন্দোলনে নিহতদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও দ্রুত বিচার প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার জোরালো দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। পাশাপাশি শহীদদের পরিবারের জন্য সম্মানজনক পুনর্বাসন ও নিরাপদ ভবিষ্যৎ গড়ে তোলারও আহ্বান জানান তিনি।
শহীদদের আত্মত্যাগকে স্মরণ ও ন্যায়বিচারের দাবি
মঙ্গলবার রাজধানীর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে ‘গণ-অভ্যুত্থান ২০২৪: জাতীয় ঐক্য ও গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে ভিডিও বার্তার মাধ্যমে তিনি এই দাবি পুনর্ব্যক্ত করেন। শহীদ পরিবারের সদস্যরা এতে উপস্থিত ছিলেন।
খালেদা জিয়া তার ভাষণে বলেন, “১৬ বছরের শাসনামলে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে একদলীয় শাসন কায়েম করার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু ছাত্র-জনতার রক্তে লেখা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদী শাসনের পতন ঘটেছে। এখন নতুন বাংলাদেশ গড়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে।”
তিনি আরও যোগ করেন, “এই আন্দোলনে যারা প্রাণ দিয়েছেন, তাদের আত্মত্যাগ ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। কিন্তু শুধু স্মরণ করলেই চলবে না, তাদের পরিবারের জন্য ন্যায়বিচার ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি নিশ্চিত করতে হবে।”
গুম, খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের তালিকা প্রস্তুতের আহ্বান
বিএনপি প্রধান জোর দিয়ে বলেন, “গুম, খুন ও বি�িচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার সকলের একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি করতে হবে। যাতে তাদের পরিবারগুলোর ন্যায্য পাওনা আদায় করা যায়।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, “এখন আমাদের সামনে একটি সুযোগ এসেছে—গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার, কর্মসংস্থান সৃষ্টির এবং জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার। সর্বোপরি, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।”
শহীদ পরিবারদের পাশে দাঁড়ানোর অঙ্গীকার
অনুষ্ঠানে শহীদ আবু সাঈদ, মীর মুগ্ধ, ওয়াসিম, বিশ্বজিৎসহ অন্যান্য নিহত ও গুম হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন।
খালেদা জিয়া তার বক্তব্যে শেষ করেন এভাবে— “বীর শহীদদের রক্ত আর মায়ের অশ্রু যেন বৃথা না যায়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। আমরা তাদের আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম চালিয়ে যাব।”
মূল বার্তা:
জুলাই হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার ও শহীদদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবি
শহীদ পরিবারদের পুনর্বাসন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান
গুম, খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের তালিকা প্রস্তুতের প্রয়োজনীয়তা
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও নতুন বাংলাদেশ গঠনের অঙ্গীকার
আরও পড়ুন: রাজশাহীতে স্কুলছাত্রী অপহরণ ও ধর্ষণ: যুবক গ্রেফতার