বেসরকারি কলেজে অনার্স ও মাস্টার্স কোর্সের শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের দাবি এমপিওভুক্তির বিষয়ে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আজাদ খান সম্প্রতি এ বিষয়ে আশাব্যঞ্জক তথ্য দিয়েছেন। এই সিদ্ধান্ত যদি চূড়ান্ত হয়, তাহলে হাজার হাজার শিক্ষকের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটবে এবং উচ্চশিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি পাবে।
এমপিওভুক্তির প্রক্রিয়া ও বর্তমান অবস্থা
গত ২ জুলাই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এক উচ্চপর্যায়ের সভায় বেসরকারি কলেজের অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়ের, শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি।
মহাপরিচালক ড. আজাদ খান জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে আলোচনাটি ইতিবাচক হয়েছে এবং এমপিওভুক্তির জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। তবে কিছু শর্তসাপেক্ষে এই সুবিধা দেওয়া হতে পারে, যা শিক্ষা ও অর্থ মন্ত্রণালয় চূড়ান্ত করবে।
শর্তাবলি ও সম্ভাব্য সুবিধা
এমপিওভুক্তির জন্য নিম্নলিখিত শর্তগুলো বিবেচনা করা হচ্ছে:
শুধুমাত্র জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত বেসরকারি কলেজের নিয়মিত ও কর্মরত শিক্ষকরা এই সুবিধা পাবেন।
শিক্ষকদের নিয়োগ প্রক্রিয়া এবং যোগ্যতা নির্দিষ্ট নীতিমালা অনুযায়ী যাচাই করা হবে।
এমপিওভুক্তি ছাড়াও অন্যান্য সুবিধা (বেতন-ভাতা, পেনশন ইত্যাদি) কীভাবে দেওয়া হবে, তা নির্ধারণ করা হবে।
শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের সংগ্রাম
বেসরকারি কলেজের অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকরা দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে এমপিওভুক্তির দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন। তারা মানবন্ধন, গোলটেবিল বৈঠক, এমনকি অনশন পর্যন্ত করেছেন। তাদের প্রধান অভিযোগ, একই কলেজে এইচএসসি ও ডিগ্রি পাস কোর্সের শিক্ষকরা এমপিও সুবিধা পেলেও অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকরা বঞ্চিত হচ্ছেন।
বর্তমানে সারাদেশে ৪৯৫টি বেসরকারি কলেজে প্রায় ৩,৫০০ শিক্ষক কর্মরত রয়েছেন। এমপিওভুক্তির সিদ্ধান্ত হলে এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
অর্থবরাদ্দ ও পরবর্তী পদক্ষেপ
শিক্ষা মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যে এমপিওভুক্তির জন্য ১১২ কোটি টাকা বরাদ্দের অনুরোধ জানিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর থেকে প্রাপ্ত প্রাক্কলন অনুযায়ী এই অর্থ বরাদ্দ করা সম্ভব হলে, শিগগিরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।
শেষ কথা
বেসরকারি কলেজের অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির দাবি যদি বাস্তবায়িত হয়, তাহলে এটি উচ্চশিক্ষা খাতের জন্য একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত হবে। এটি শিক্ষকদের আর্থিক সুরক্ষা দেবে এবং শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। আশা করা যায়, দ্রুতই এই ইস্যুতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে এবং শিক্ষকরা তাদের ন্যায্য অধিকার পাবেন।
আপনার মতামত জানাতে কমেন্ট করুন এবং এই গুরুত্বপূর্ণ তথ্যটি শেয়ার করে সবাইকে জানিয়ে দিন!
আরও পড়ুন: ৪৫তম বিসিএস মৌখিক পরীক্ষার সময়সূচি প্রকাশ: শুরু ৮ জুলাই