সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের যুগে ব্যক্তিগত মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা থাকলেও সরকারি কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রে এটি একটি সংবেদনশীল বিষয়। সম্প্রতি লালমনিরহাটের সাবেক সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাপসী তাবাসসুম একটি বিতর্কিত ফেসবুক পোস্টের কারণে চাকরি হারিয়েছেন। সরকারি কর্মচারীদের শৃঙ্খলা ও আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে তাঁকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
কী ঘটেছিল?
তাপসী তাবাসসুম তাঁর ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি স্ট্যাটাস পোস্ট করেন, যেখানে তিনি সাবেক অন্তর্বর্তী সরকার ও প্রধান উপদেষ্টাকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেন। এই পোস্টটি সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয় এবং সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে তাঁর আচরণ প্রশ্নের মুখে পড়ে।
কার্যক্রম ও শাস্তি
ঘটনাটি প্রকাশ পাওয়ার পর প্রথমে তাপসী তাবাসসুমকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) হিসেবে বদলি করা হয়। পরে, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্তের আদেশ দেয়।
সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮-এর অধীনে তাঁর বিরুদ্ধে আনীত অসদাচরণের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাঁকে “চাকরি থেকে বরখাস্ত” করার শাস্তি দেওয়া হয়েছে।
সরকারি চাকরিতে সামাজিক মিডিয়ার ভূমিকা
এই ঘটনাটি সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা। সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সতর্কতা অবলম্বন করা অত্যন্ত জরুরি। ব্যক্তিগত মতামত প্রকাশের সময় দায়িত্বশীল আচরণ ও সরকারি বিধি-নিষেধ মেনে চলা উচিত।
কী করণীয়?
সরকারি কর্মকর্তাদের উচিত রাজনৈতিক বা সংবেদনশীল বিষয়ে সতর্ক থাকা।
ব্যক্তিগত সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে বিবেচনাহীন পোস্ট এড়িয়ে চলা।
সরকারি নিয়মকানুন সম্পর্কে সচেতন থাকা।
উপসংহার
তাপসী তাবাসসুমের ঘটনা সকল সরকারি কর্মচারী ও সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য একটি সতর্কবার্তা। সামাজিক মাধ্যমের স্বাধীনতা থাকলেও দায়িত্বশীল ব্যবহার অপরিহার্য। বিশেষ করে সরকারি চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে এটি আরও বেশি প্রযোজ্য।
এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা যেন সোশ্যাল মিডিয়ায় সচেতন ও সুযোগ্য আচরণ করি, সেদিকে খেয়াল রাখা উচিত।
আরও পড়ুন: দোহারে বিএনপি নেতা হারুন মাস্টার নৃশংস হত্যাকাণ্ড: নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব নাকি ব্যবসায়িক সংঘাত?