ঢাকার একটি আদালতে চলচ্চিত্র অভিনেতা মনোয়ার হোসেন ডিপজল ও তার ব্যক্তিগত সহকারী মো. ফয়সালের বিরুদ্ধে মারধর ও এসিড নিক্ষেপের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বাদী রাশিদা আক্তার (৩৫) এর দায়ের করা মামলাটি মঙ্গলবার (৮ জুলাই) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব আলমের আদালতে গৃহীত হয়। আদালত বাদীর জবানবন্দি রেকর্ড করে তদন্তের জন্য মামলাটি সিআইডির কাছে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
বাদীর আইনজীবী মুজাহিদুল ইসলাম জানান, মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ২ জুন রাজধানীর একটি কোরবানির গরুর হাটে ডিপজলের উপস্থিতির খবর পেয়ে রাশিদা আক্তার তার ভক্ত হিসেবে তাকে দেখতে যান। কিন্তু সেখানে ডিপজল তার সহকারীকে নির্দেশ দেন, “এই মহিলা এখানে কীভাবে ঢুকলো? বের করে দাও!” এরপর ডিপজলের সহকারীসহ সেখানে থাকা ৮-১০ জন রাশিদাকে মারধর শুরু করে এবং রশি দিয়ে টেনেহিঁচড়ে বের করে দিতে চায়।
এসিড নিক্ষেপের ভয়াবহ অভিযোগ
বাদী রাশিদা আক্তার দাবি করেন, আহত অবস্থায় তিনি ডিপজলের কাছে বিচার চাইলে তার সহকারী হুমকি দিয়ে বলেন, “ভেতরে গেলে ডিপজল ভাই তোমাকে খুন করে ফেলবে!” এরপর এক ব্যক্তি একটি ছোট গ্যালন নিয়ে এসে তা রাশিদার ঘাড়ে ঢেলে দেয়। তীব্র যন্ত্রণায় কাতরাতে থাকা রাশিদাকে সেখান থেকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। পরবর্তীতে ৪ থেকে ১১ জুন পর্যন্ত তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসা নিতে হয়।
মামলা দায়েরে বাধা ও হুমকি
রাশিদা আরও অভিযোগ করেন, ১২ জুন তিনি মামলা দায়ের করতে গেলে ডিপজলের সহকারী তাকে ফোন করে মামলা না করার হুমকি দেন। তবে ভুক্তভোগী আইনের আশ্রয় নেওয়ায় এখন বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন।
আদালতের নির্দেশনা ও পরবর্তী পদক্ষেপ
ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব আলমের আদালত মামলাটি গ্রহণ করে সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। এখন তদন্তের ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে মামলাটির অগ্রগতি নির্ভর করবে।
সামাজিক দায়বদ্ধতা ও ন্যায়বিচারের দাবি
এ ধরনের ঘটনা সমাজে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। একজন জনপ্রিয় অভিনেতার বিরুদ্ধে এমন গুরুতর অভিযোগ ন্যায়বিচার ব্যবস্থার কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। ভুক্তভোগীর সঠিক চিকিৎসা ও আইনি সহায়তা নিশ্চিত করা এখন সবচেয়ে জরুরি।
এই মামলার তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হলে তা সমাজে ন্যায়বিচারের একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে। আমরা আশা করি, দোষীরা তাদের কৃতকর্মের জন্য উপযুক্ত শাস্তি পাবে এবং ভুক্তভোগী তার ন্যায্য অধিকার ফিরে পাবেন।
আরও পড়ুন: তানজিন তিশার ‘গোপন সন্তান’ কেলেঙ্কারি: সত্য না গুজব?
#ডিপজল #এসিডনিক্ষেপ #আইন_ও_ন্যায়বিচার #অপরাধ_দমন #সিআইডি