ফরিদপুরের সদরপুরে এক মর্মান্তিক ঘটনায় স্তম্ভিত হয়ে পড়েছে এলাকাবাসী। এক নারীকে (৪৯) ধর্ষণের পর নির্মমভাবে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক খালাসী ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। শনিবার রাত ৩টার দিকে আকোটেরচর ইউনিয়নের ছলেমানা গ্রামে এ নৃশংস ঘটনা ঘটে। রোববার রাতে সদরপুর থানার ওসি নাজমুল হাসান ঘটনাটির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
ঘটনার বিবরণ
স্থানীয় সূত্র ও পুলিশের বরাতে জানা গেছে, অভিযুক্ত মোমরেজ খালাসী ও তার দুই সহযোগী ঘটনার রাতে ওই নারীর বাড়িতে যান। সেখানে কিছুক্ষণ আড্ডা দেওয়ার পর তারা তাকে একটি ঘরে ডেকে নেন। কিছু সময় পর নারীটি অসুস্থ হয়ে পড়লে তারা তাকে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। নারীর নাতনি ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, “আমি নানিকে অসুস্থ দেখে চিৎকার করি। প্রতিবেশীরা এসে তাকে হাসপাতালে নিলে ডাক্তাররা মৃত ঘোষণা করেন।”
তদন্ত ও প্রতিক্রিয়া
পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, নারীটিকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হতে পারে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টের মাধ্যমে ঘটনার সঠিক কারণ জানা যাবে বলে জানিয়েছেন সদরপুর থানার তদন্ত কর্মকর্তা নাজমুল হাসান। তিনি আরও উল্লেখ করেন, “ঘটনাটি তদন্তাধীন রয়েছে, তবে এখন পর্যন্ত কোনো মামলা দায়ের করা হয়নি।”
অভিযুক্তদের পলাতক
ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত মোমরেজ খালাসী ও তার দুই সহযোগী পলাতক রয়েছেন। পুলিশ তাদের গ্রেপ্তারের জন্য তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে।
সম্পর্কের জটিলতা
প্রতিবেশীদের বরাতে জানা যায়, মৃত নারীর স্বামীর তিন স্ত্রী ছিলেন, যার মধ্যে তিনি ছিলেন তৃতীয়। অভিযুক্ত মোমরেজের সঙ্গে তার অবৈধ সম্পর্ক ছিল বলেও অভিযোগ রয়েছে। এ কারণেই মোমরেজ প্রায়ই ওই বাড়িতে যাতায়াত করতেন এবং রাতেও সেখানে অবস্থান করতেন।
সমাজে নারীর নিরাপত্তা প্রশ্নে উদ্বেগ
এ ধরনের ঘটনা সমাজে নারী নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর পদক্ষেপ ও দ্রুত বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
সতর্কতা ও করণীয়
- পরিবারের সদস্যদের গতিবিধি সম্পর্কে সচেতন থাকুন।
- সন্দেহজনক কোনো আচরণ দেখলে স্থানীয় প্রশাসন বা পুলিশকে জানান।
- নারী ও শিশু নিরাপত্তায় সামাজিক সচেতনতা বাড়াতে সকলে এগিয়ে আসুন।
ফরিদপুরের এই ঘটনা নিষ্ঠুরতার চরম উদাহরণ। আশা করা যায়, দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় গৃহবধুকে ধর্ষণের পর চুল কেটে দেওয়ার অভিযোগ
#ফরিদপুর #ধর্ষণ #নারীহত্যা #অপরাধ #আইনশৃঙ্খলা