বাগমারায় নৃশংস ঘটনায় স্থানীয়দের ক্ষোভ
রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় এক মর্মান্তিক ঘটনায় স্থানীয়রা হতবাক। মাত্র ছয় বছর বয়সী এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে ৭০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ঘটনাটি গত শনিবার ঘটলেও অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে সোমবার সন্ধ্যায়।
ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত জয়নাল খাঁ (৭০) শিশুটিকে টাকার লোভ দেখিয়ে একটি পানবরজে (জলাশয় সংলগ্ন বাঁশের বাগান) নিয়ে যায়। সেখানে শিশুটিকে নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়। ঘটনার সময় পাশের বাড়ির এক যুবক ও শিশুটির পরিবারের সদস্যরা সন্দেহ করে ঘটনাস্থলে ছুটে গেলে জয়নাল খাঁ পালিয়ে যায়।
শিশুটিকে উদ্ধার করে দ্রুত চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে পরিবারের পক্ষ থেকে বাগমারা থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। থানায় মামলা দায়ের করে শিশুটির বাবা। পুলিশ তদন্তে এগিয়ে এসে অভিযুক্ত বৃদ্ধকে তার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে।
পুলিশ ও প্রশাসনের তৎপরতা
বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল ইসলাম ঘটনাটি নিশ্চিত করে জানান, অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। শিশুটিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। আইনগত প্রক্রিয়া অনুসরণ করে অভিযুক্তকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
সমাজে নৈতিক অবক্ষয়ের চিত্র
এ ধরনের ঘটনা সমাজের নৈতিক অধঃপতনের চিত্রই ফুটে তোলে। শিশুদের প্রতি এমন নৃশংসতা শুধু একটি পরিবারকেই নয়, গোটা সমাজকে নাড়া দেয়। শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পরিবার, সমাজ ও প্রশাসন—সবাইকে সচেতন হতে হবে।
শিশু সুরক্ষায় করণীয়
১. সচেতনতা বৃদ্ধি: শিশুদের সাথে কীভাবে আচরণ করতে হয়, সে বিষয়ে সমাজে সচেতনতা বাড়াতে হবে।
২. নিরাপদ পরিবেশ: শিশুদের একা ঘুরতে না দেওয়া এবং অপরিচিত ব্যক্তির সান্নিধ্য এড়ানো।
৩. দ্রুত আইনি ব্যবস্থা: শিশু নির্যাতনের ঘটনায় দ্রুত মামলা দায়ের ও কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা।
শেষ কথা
শিশু ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধ কোনো সভ্য সমাজে গ্রহণযোগ্য নয়। এই ঘটনায় কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করে শিশুদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে। পাশাপাশি, সমাজের সব স্তরের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে।
আরও পড়ুন: ধর্ষণের শিকার লামিয়ার আত্মহত্যা: সমাজের নিষ্ঠুরতার আরেকটি করুণ পরিণতি
আপনার মতামত জানান: শিশু নির্যাতন রোধে আপনার কী মতামত? নিচে কমেন্ট করে শেয়ার করুন।