ক্রিকেট বিশ্বে নাম কুড়ানো তরুণ ক্রিকেটার শিবালিক শর্মা এখন আলোচনায় এক ভিন্ন কারণে। IPL 2025-এ ভালো পারফরম্যান্সের পরও তাঁর বিরুদ্ধে উঠেছে মারাত্মক অভিযোগ। রাজস্থানের জোধপুরে এক তরুণী তাঁর বিরুদ্ধে বিয়ের মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষণ করার অভিযোগ এনেছেন। ঘটনাটি সামনে আসার পরই ক্রিকেট ফ্যানদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত: কীভাবে শুরু হয়েছিল সম্পর্ক?
অভিযোগকারী তরুণী জানিয়েছেন, ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে গুজরাটের বরোদায় শিবালিক শর্মার সঙ্গে তাঁর প্রথম দেখা। ধীরে ধীরে দুজনের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে এবং তা প্রেমের সম্পর্কে রূপ নেয়। ফোন ও মেসেজের মাধ্যমে নিয়মিত যোগাযোগ চলতে থাকে।
পরবর্তীতে ২০২৩ সালের আগস্ট মাসে শিবালিকের পরিবার জোধপুরে গিয়ে তরুণীর পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন। দুপক্ষের সম্মতিতে বাগদানও সম্পন্ন হয়। কিন্তু এরপরই ঘটে যায় অপ্রত্যাশিত ঘটনা।
অভিযোগ: প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ ও শোষণের অভিযোগ
তরুণীর বক্তব্য অনুযায়ী, বাগদানের পর শিবালিক জোধপুরে এলে বিয়ের কথা বলে তাঁর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। তাঁরা একসাথে রাজস্থানের বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণও করেন। কিন্তু ২০২৪ সালের আগস্টে হঠাৎ করেই শিবালিকের পরিবার বরোদায় তরুণী ও তাঁর পরিবারকে ডেকে পাঠান এবং জোর করে বাগদান ভেঙে দেন।
এই ঘটনার পর তরুণী জোধপুরের হাউজিং বোর্ড থানায় শিবালিক শর্মার বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও প্রতারণার মামলা দায়ের করেন। পুলিশের পক্ষ থেকে এসিপি আনন্দ সিং রাজপুরোহিত নিশ্চিত করেছেন যে, অভিযোগটি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে।
পুলিশের তদন্ত ও শিবালিকের ভবিষ্যৎ
পুলিশ ইতিমধ্যে তরুণীর বয়ান রেকর্ড করেছে এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্যও নেওয়া শুরু করেছে। আইনি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৫ ও ৪১৬ ধারা অনুযায়ী এই মামলায় শিবালিকের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা হতে পারে।
ক্রিকেট ক্যারিয়ারে প্রভাব
শিবালিক শর্মা IPL 2025-এ ভালো পারফরম্যান্স করলেও এই অভিযোগ তাঁর ক্রিকেট ক্যারিয়ারে বড় ধাক্কা দিতে পারে। যদি তিনি দোষী সাব্যস্ত হন, তাহলে BCCI তাঁর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞাও জারি করতে পারে। ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে।
সামাজিক দায়বদ্ধতা ও নারী সুরক্ষা
এই ঘটনা ক্রিকেট বিশ্বের পাশাপাশি সমাজকেও ভাবিয়ে তুলেছে। বিয়ের মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে নারীদের শোষণের মতো ঘটনা আজও আমাদের সমাজে ঘটছে। আইনের কঠোর প্রয়োগ এবং সচেতনতা বাড়ানোই একমাত্র উপায় এই ধরনের অপরাধ রোধ করার।
শেষ কথা
শিবালিক শর্মার এই মামলা শুধু একটি ব্যক্তিগত ইস্যু নয়, এটি ক্রিকেট ও সমাজের জন্য একটি বড় প্রশ্নচিহ্ন রেখে গেছে। আশা করা যায়, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে এবং এই ধরনের ঘটনা ভবিষ্যতে যেন না ঘটে, সে ব্যাপারে সকলে সচেতন হবে।
আরও পড়ুন: মেটা এআই: চ্যাটজিপিটির নতুন প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আত্মপ্রকাশ
আপনার মতামত জানান কমেন্টে— এই ধরনের ঘটনায় ক্রিকেটারদের কী ধরনের শাস্তি হওয়া উচিত?