গাজীপুরে এক নেতার গাড়িতে হামলা, উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতি
গাজীপুরে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহর গাড়িতে সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। রোববার সন্ধ্যায় চান্দনা চৌরাস্তায় এ ঘটনায় তার গাড়ির কাচ ভেঙে যায় এবং তিনি হাতে আঘাত পান। পুলিশ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে দুজনকে আটক করেছে। এনসিপি নেতাকর্মীরা হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দোষীদের গ্রেফতারের দাবি তুলেছেন।
ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ
হাসনাত আবদুল্লাহ গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় একটি অনুষ্ঠান শেষে ঢাকায় ফিরছিলেন। চান্দনা চৌরাস্তায় ট্রাফিক জ্যামে আটকে থাকা অবস্থায় ৪-৫টি মোটরসাইকেল আরোহী তার গাড়িতে হামলা চালায়। হামলাকারীরা গাড়ির উইন্ডশিল্ড ও কাচ ভেঙে ফেলে, এতে হাসনাতের হাত রক্তাক্ত হয়।
এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম ফেসবুকে পোস্ট করে জানান, “১০-১২ জন সন্ত্রাসী হাসনাতের গাড়িতে হামলা চালিয়েছে। তিনি আহত হয়েছেন, আশপাশের লোকজন তাকে সুরক্ষা দিন।”
পুলিশের তৎপরতা ও গ্রেফতার
গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার রবিউল হাসান জানিয়েছেন, হামলার ঘটনায় দুজনকে আটক করা হয়েছে। তারা হলেন:
মো. নিজাম উদ্দিন (গাজীপুর মহানগর যুবলীগের ১৩ নং ওয়ার্ড নেতা)
মাসুম আহমেদ দিপু (শেখ রাসেল শিশু-কিশোর পরিষদের সভাপতি)
পুলিশ বাকি হামলাকারীদের গ্রেফতারে অভিযান চালাচ্ছে।
এনসিপির তীব্র প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ
ঘটনার পর এনসিপি নেতাকর্মীরা ঢাকা, গাজীপুর ও কুমিল্লাসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ করেছে। গাজীপুরে মশাল মিছিল এবং রাজধানীর বাংলামোটরে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট হুমায়রা নূর বলেন, “এটি শুধু একজন নেতার ওপর হামলা নয়, গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে আঘাত। দোষীদের কঠোর শাস্তি দিতে হবে।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র বিক্ষোভ
হাসনাতের ওপর হামলার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও বিক্ষোভ করেছে। তারা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগকে “সন্ত্রাসী সংগঠন” আখ্যা দিয়ে নিষিদ্ধ করার দাবি তোলে। আইন বিভাগের শিক্ষার্থী রেদোয়ান আহমেদ রিফাত বলেন, “এই গোষ্ঠী দেশে সন্ত্রাস ছড়াচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”
পরবর্তী কর্মসূচি ও রাজনৈতিক প্রভাব
এনসিপি নেতারা জানিয়েছেন, যদি হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার না করা হয়, তবে তারা দেশব্যাপী বড় আন্দোলনের ঘোষণা দেবেন। এই ঘটনা রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন উত্তাপ সৃষ্টি করেছে এবং ভবিষ্যতে আরও বড় সংঘাতের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
মন্তব্য:
গাজীপুরের এই হামলা শুধু একটি রাজনৈতিক দলের ওপর আক্রমণ নয়, এটি দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য হুমকি। পুলিশের দ্রুত তদন্ত এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা জরুরি। নাগরিক সমাজ ও রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত সহিংসতা প্রতিরোধে ঐক্যবদ্ধ হওয়া।
আরও পড়ুন: বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ: শৈলকূপায় নারীর বিরুদ্ধে নির্মম অপরাধ
আপনার মতামত জানান: এই হামলার পেছনে কাদের হাত থাকতে পারে? রাজনৈতিক সহিংসতা রোধে কী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত? কমেন্টে শেয়ার করুন।