রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার বালারহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সাবেক জামায়াত নেতা আবুল হাসনাত রতনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা দায়ের করেছেন এক নারী ইউপি সদস্য। ঘটনাটি সামাজিক মাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে এবং স্থানীয় প্রশাসন তদন্তে এগিয়ে এসেছে। আসামি বর্তমানে পলাতক থাকলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তার গ্রেফতারে তৎপর।
ঘটনার বিবরণ
মামলার এজাহার ও ভুক্তভোগীর বক্তব্য অনুযায়ী, চেয়ারম্যান রতন প্রায়ই সরকারি-বেসরকারি কাজে বাইরে যাওয়ার সময় নারী সদস্যকে দায়িত্ব দিতেন। এভাবে তাদের মধ্যে পেশাগত সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত ২৮ মার্চ রতন তাকে রংপুর শহরের আদর্শপাড়ায় তার ভাড়া বাসায় ডেকে নিয়ে যান, যেখানে তিনি সরকারি বরাদ্দ সংক্রান্ত আলোচনার কথা বলেছিলেন।
ঘটনাস্থলে রতনের ব্যক্তিগত সহকারী আল আমিনও উপস্থিত ছিলেন। কিছুক্ষণ আলাপের পর সহকারী চলে গেলে, রতন নারী সদস্যকে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা করেন। ভুক্তভোগী জানান, তিনি প্রতিরোধ করলেও রতন তার হাত-পা চেপে ধরে শারীরিকভাবে আঘাত করেন। পরে স্থানীয় ইউপি সদস্যদের সহায়তায় তিনি ঘটনাস্থল থেকে বের হতে সক্ষম হন।
মামলা ও জামায়াতের পদক্ষেপ
ঘটনার প্রেক্ষিতে গত ২ এপ্রিল ভুক্তভোগী নারী কোতোয়ালি থানায় ধর্ষণের মামলা দায়ের করেন। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে জামায়াতে ইসলামী রতনকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে। মিঠাপুকুর উপজেলা জামায়াত নেতা আব্দুল বাতেন হারুন জানান, ঘটনার সত্যতা পাওয়ার পর প্রায় দুই মাস আগেই তাকে দলীয় পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আসামি পলাতক, পুলিশের তদন্ত চলছে
মামলার পর থেকেই আবুল হাসনাত রতন পলাতক রয়েছেন। তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও সফল হননি সাংবাদিকরা। রংপুর কোতোয়ালি থানার ওসি আতাউর রহমান নিশ্চিত করেছেন যে মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়েছে এবং আসামিকে গ্রেফতারের জন্য তল্লাশি চলছে।
সমাজে নারীর নিরাপত্তা ও বিচারের দাবি
এ ধরনের ঘটনা সমাজে নারীর নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। ভুক্তভোগীর সঠিক বিচার ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে স্থানীয় জনগণ ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো সোচ্চার হয়েছে। নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতা নীতি বাস্তবায়ন এবং ক্ষমতাধর ব্যক্তিদের অপকর্ম থেকে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়েছে।
উপসংহার
ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা এবং সামাজিক সচেতনতা জরুরি। এই মামলাটি যেন ন্যায়বিচারের আলো দেখে এবং ভবিষ্যতে এমন ঘটনা প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখে, তা নিশ্চিত করতে সকল স্তরের সচেতনতা প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: ডেমরায় প্রযুক্তির অপব্যবহার: পর্নোগ্রাফি আসক্তি ও সামাজিক অপরাধের ঊর্ধ্বগতি
আপনার মতামত জানান:
এই ঘটনা সম্পর্কে আপনার মতামত কি? নারী নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে আর কী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত? কমেন্টে শেয়ার করুন।