ভয়াবহ অপরাধের শিকার এক নিরীহ দম্পতি
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার একটি গ্রামে এক মাছ ও মুরগির সমন্বিত খামারের কর্মচারী এবং তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী নৃশংস অপরাধের শিকার হয়েছেন। শুক্রবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে চার সশস্ত্র দুর্বৃত্ত ঘরে ঢুকে স্বামীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তাঁর হাত-পা বেঁধে ফেলে। এরপর তারা গর্ভবতী স্ত্রীকে নির্মমভাবে ধর্ষণ করে। এই ঘটনায় আক্রান্ত নারীকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ
খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার বাসিন্দা এই দম্পতি সাতক্ষীরার একটি খামারে মাসিক ১৫ হাজার টাকা বেতনে কাজ করেন। তাঁরা খামারের একটি ঘরেই থাকেন। আক্রান্ত নারী জানান, রাতে তিনি ও তাঁর স্বামী ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় চারজন সশস্ত্র লোক রামদা নিয়ে ঘরে প্রবেশ করে। তারা প্রথমে তাঁর স্বামীকে বেঁধে ফেলে এবং ঘরের টাকা-গয়না লুট করে নেয়।
লুটের তালিকায় ছিল:
মাসিক বেতনের সঞ্চয় ৩৭ হাজার টাকা
১১ আনা ওজনের এক জোড়া সোনার কানের দুল
১০ আনা ওজনের একটি সোনার আংটি
খামারে ব্যবহৃত দুটি দা
এরপর অপরাধীরা তাঁকে রান্নাঘরে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। আক্রান্ত নারী জানিয়েছেন, তিনি ধর্ষকদের মধ্যে স্থানীয় বাসিন্দা মনিরুল ইসলাম, দেলোয়ার হোসেন ও আশরাফুল ইসলাম-কে চিনতে পেরেছেন।
পুলিশের তদন্ত ও ব্যবস্থা
ঘটনার খবর পেয়ে সাতক্ষীরা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহীনুর চৌধুরী, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শামিনুল হক এবং পুলিশ পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পুলিশ জানিয়েছে, সন্দেহভাজনদের গ্রেপ্তারে তৎপরতা চলছে। তবে, শনিবার বিকেল পর্যন্ত এই ঘটনায় কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
সমাজে অপরাধের বৃদ্ধি ও নারী নিরাপত্তা
এ ধরনের ঘটনা শুধু একটি পরিবারকে ধ্বংস করে না, সমগ্র সমাজকে নাড়া দেয়। গর্ভবতী নারীর ওপর এমন পাশবিক অত্যাচার মানবতার বিরুদ্ধে জঘন্য অপরাধ। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে এই অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি হওয়া উচিত।
কী করা উচিত?
দ্রুত বিচার নিশ্চিত করা: অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
সামাজিক সচেতনতা বাড়ানো: এলাকাবাসীকে সতর্ক থাকতে হবে এবং সন্দেহজনক ব্যক্তিদের সম্পর্কে প্রশাসনকে জানাতে হবে।
নারী নিরাপত্তা জোরদার: গ্রামীণ এলাকায় নারীদের নিরাপত্তা বাড়াতে স্থানীয় পর্যায়ে নজরদারি বাড়ানো প্রয়োজন।
শেষ কথা
এই ঘটনা আমাদের সমাজের অন্ধকার দিকটি আবারও মনে করিয়ে দিল। নারী ও শিশু নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার, প্রশাসন এবং সমাজের সকল স্তরের মানুষকে একসাথে কাজ করতে হবে। আশা করি, দোষীদের দ্রুত বিচার হবে এবং আক্রান্ত পরিবারকে ন্যায়বিচার মিলবে।
আরও পড়ুন: মাগুরার শিশু ধর্ষণ-হত্যা মামলা: শুরু থেকে যা যা হয়েছিল
#নারীনিরাপত্তা #ধর্ষণবিরোধী #সাতক্ষীরা #অপরাধদমন