ঢাকার চলচ্চিত্র জগতের আলোচিত অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়া সম্প্রতি একটি মামলায় জড়িয়ে কারাগারে প্রেরিত হয়েছেন। ভাটারা থানার একটি হত্যাচেষ্টা মামলায় তাকে আসামি করা হয়েছে, যার প্রেক্ষিতে আদালত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
কী ঘটেছিল আদালতে?
সোমবার (১৯ মে) সকালে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ ফারজানা হকের আদালতে নুসরাত ফারিয়াকে হাজির করা হয়। শুনানির সময় তিনি কাঠগড়ায় নীরবে দাঁড়িয়ে ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী তাকে “ফ্যাসিস্টের দোসর” বলে অভিযোগ করেন। এ সময় নুসরাত ফারিয়াকে চোখ মুছতে দেখা যায়, যা গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়।
তদন্ত কর্মকর্তা তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন, অন্যদিকে তার আইনজীবীরা জামিনের জন্য আবেদন করেন। উভয় পক্ষের যুক্তি শোনার পর আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেন। পাশাপাশি, আগামী ২২ মে আরও শুনানির জন্য দিন নির্ধারণ করা হয়।
গ্রেফতারের পেছনের ঘটনা
নুসরাত ফারিয়াকে গত রোববার (১৮ মে) থাইল্যান্ড যাওয়ার উদ্দেশ্যে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন পুলিশ আটক করে। পরে তাকে ভাটারা থানায় হস্তান্তর করা হয় এবং জিজ্ঞাসাবাদের পর তাকে মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।
মামলার পটভূমি
এই মামলাটি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় ভাটারা থানায় সংঘটিত একটি হত্যাচেষ্টার ঘটনাকে কেন্দ্র করে দায়ের করা হয়। এতে নুসরাত ফারিয়া ছাড়াও অপু বিশ্বাস, নিপুণ আক্তার, আশনা হাবিব ভাবনা, জায়েদ খানসহ মোট ১৭ জন চলচ্চিত্র শিল্পীকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার অভিযোগ অনুযায়ী, আসামিরা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের বিরোধিতা করেছিলেন এবং ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন বলে দাবি করা হয়। গত ২৮ এপ্রিল আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে ২৯ এপ্রিল ভাটারা থানায় মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়।
জনপ্রিয়তার মাঝে বিতর্ক
নুসরাত ফারিয়া ঢাকাই চলচ্চিত্রের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী। তবে সাম্প্রতিক সময়ে রাজনৈতিক বিতর্কে তার নাম জড়িয়ে পড়ায় তিনি আলোচনায় আসেন। তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ এবং আদালতের রায় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা মতামত উঠে এসেছে।
পরবর্তী শুনানি কবে?
আদালত আগামী ২২ মে নুসরাত ফারিয়ার জামিন আবেদন নিয়ে পুনরায় শুনানির তারিখ নির্ধারণ করেছেন। এই মামলার গতি-প্রকৃতি এবং তার ভবিষ্যৎ আইনি লড়াই নিয়ে চলচ্চিত্র ও রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে।
সামাজিক প্রতিক্রিয়া
এ ঘটনায় চলচ্চিত্র শিল্পী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। কেউ কেউ আদালতের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করছেন, আবার অনেকে এটিকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মনে করছেন।
শেষ কথা
নুসরাত ফারিয়ার এই মামলা শুধু একটি আইনি ইস্যু নয়, বরং এটি সমাজ ও রাজনীতির বিভিন্ন স্তরের সম্পর্ককে উন্মোচন করেছে। আগামী দিনগুলোতে এই মামলার দিকনির্দেশনা এবং নুসরাত ফারিয়ার ভাগ্য কী হয়, তা দেখার জন্য সবাই উদগ্রীব।
আরও পড়ুন: বলিউড অভিনেতা এজাজ খানের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ
আপনার মতামত জানান: নুসরাত ফারিয়ার এই মামলা নিয়ে আপনার কী মনে হয়? কমেন্টে শেয়ার করুন!