মাগুরায় ৮ বছরের শিশু আছিয়ার নির্মম ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের মামলায় আদালতের রায়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। প্রধান আসামি হিটু শেখকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলেও অন্য তিন আসামিকে খালাস দেওয়ায় শিশুটির পরিবার রায় মেনে নিতে পারছেন না।
ঘটনার সংক্ষিপ্ত পটভূমি
গত ৬ মার্চ, মাগুরার শ্রীপুর উপজেলায় আট বছরের আছিয়া তার বড় বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল। সেখানে সে ধর্ষণের শিকার হয় এবং গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সাত দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর ১৩ মার্চ ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
এই মর্মান্তিক ঘটনায় মামলায় আসামি করা হয় শিশুটির বোনের শ্বশুর হিটু শেখ, বোনের জামাই সজীব শেখ, সজীবের ভাই রাতুল শেখ এবং তাদের মা রোকেয়া বেগম-কে।
আদালতের রায় ও পরিবারের প্রতিক্রিয়া
শনিবার (১৭ মে) মাগুরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম জাহিদ হাসান এই মামলার রায় ঘোষণা করেন। আদালত প্রধান আসামি হিটু শেখকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন, কিন্তু বাকি তিন আসামি—সজীব শেখ, রাতুল শেখ ও রোকেয়া বেগমকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
এই রায়ে মেয়ের মা ও মামলার বাদী আয়েশা বেগম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “হিটু শেখের ফাঁসির রায় আমরা স্বাগত জানাই, কিন্তু অন্য আসামিরা কেন খালাস পেল? তারা সবাই এই অপরাধে জড়িত। আমরা এই রায় মেনে নিতে পারছি না।”
আদালতের প্রক্রিয়া ও আইনজীবীদের বক্তব্য
এই মামলায় ২৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়া হয় এবং মাত্র ১২ কার্যদিবসে দ্রুত বিচার সম্পন্ন হয়। সরকারি কৌঁসুলি মনিরুল ইসলাম মুকুল জানান, বাদীপক্ষ রায়ে সন্তুষ্ট না হওয়ায় তারা উচ্চ আদালতে আপিল করার বিষয়ে আলোচনা করবেন।
সামাজিক প্রতিক্রিয়া ও ন্যায়বিচারের দাবি
এই মামলাটি দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। শিশু নির্যাতন ও হত্যার মতো জঘন্য অপরাধে দোষীদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে সাধারণ মানুষ। অনেকেই মনে করছেন, সমস্ত দোষীদের শাস্তি না হলে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হবে না।
পরবর্তী পদক্ষেপ কী?
বাদীপক্ষের আইনজীবীরা উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা ভাবছেন। এদিকে, শিশু অধিকার কর্মীরা দ্রুত বিচার প্রক্রিয়াকে স্বাগত জানালেও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে সব আসামির শাস্তি চেয়েছেন।
আরও পড়ুন: পাকুন্দিয়ায় শিশু ধর্ষণের মর্মান্তিক ঘটনা: ফুফা গ্রেপ্তার
শেষ কথা
আছিয়ার মতো নিরীহ শিশুর মৃত্যু সমাজকে কাঁদিয়ে গেছে। এই মামলার রায়ে আংশিক ন্যায়বিচার হলেও পরিবার ও সমাজ চায় সমস্ত অপরাধীর শাস্তি। আশা করা যায়, উচ্চ আদালতে আপিল করে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে।
#শিশু_নির্যাতন_বন্ধ_করুন #ন্যায়বিচার_চাই #আছিয়া