বলিউডের বিতর্কিত অভিনেতা ও উপস্থাপক এজাজ খান আবারও আলোচনায়। এবার এক তরুণী অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষণ করার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। অভিযোগকারী নারী মুম্বাইয়ের চারকোপ থানায় মামলা করেছেন, যা সাম্প্রতিক সময়ে বলিউড অঙ্গনে নতুন চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।
অভিযোগের বিস্তারিত বিবরণ
৩০ বছর বয়সী ওই অভিনেত্রীর বক্তব্য অনুযায়ী, এজাজ খান তার সঙ্গে পরিচিত হওয়ার পর তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন এবং অভিনয়ের সুযোগ দেওয়ার লোভ দেখান। এই প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে তিনি এজাজের সঙ্গে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হন। কিন্তু যখনই তিনি বিয়ের কথা তোলেন, এজাজ পিছু হটে যান।
এরই মধ্যে, গত ২৫ মার্চ, এজাজ খান তাকে তার বাসায় ডেকে নিয়ে যান। সেখানে তিনি একা থাকার সুযোগে তাকে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এই ঘটনার পর নারীটি আইনি ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হন।
কোন ধারায় মামলা হয়েছে?
অভিযুক্ত এজাজ খানের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির নিম্নলিখিত ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে:
ধারা ৩৭৬ (ধর্ষণ)
ধারা ৪২০ (প্রতারণা)
ধারা ৪৯৩ (বিয়ের মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন)
ধারা ৫০৬ (আইনি ভয়ভীতি প্রদর্শন)
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগটি তদন্তাধীন রয়েছে এবং প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এজাজ খানের বিতর্কিত অতীত
এজাজ খান নতুন করে বিতর্কে জড়ালেও এটি তার প্রথম কেলেঙ্কারি নয়। ২০২১ সালে তিনি একটি মাদক মামলায় গ্রেপ্তার হন এবং প্রায় দুই বছর জেলে কাটান। ২০২৩ সালে জামিনে মুক্তি পেলেও তার বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ আসতে থাকে।
সম্প্রতি, উল্লু অ্যাপে প্রচারিত তার রিয়েলিটি শো “হাউস অ্যারেস্ট” নিয়েও ব্যাপক সমালোচনা হয়। অভিযোগ উঠেছিল, এই শোতে অশ্লীল কনটেন্ট এবং যৌনতাকে প্রমোট করা হচ্ছে, যেখানে প্রতিযোগীদের বিভিন্ন সেক্স পজিশন প্রদর্শন করতে বলা হতো। বিষয়টি নিয়ে শিব সেনা ও বজরং দল পর্যন্ত এজাজের বিরুদ্ধে এফআইআর করেছিল।
এজাজ খানের প্রতিক্রিয়া
এই অভিযোগের পরও এজাজ খান কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেননি। তবে তার বিরুদ্ধে অতীতের অভিজ্ঞতা এবং সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো তাকে আরও বিতর্কের মুখে ফেলেছে।
সামাজিক মাধ্যমের প্রতিক্রিয়া
এই ঘটনায় সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। অনেকেই অভিনেত্রীর পক্ষে অবস্থান নিয়ে এজাজের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি দাবি করছেন। আবার কিছু ব্যবহারকারী অভিযোগটির সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
নারীদের সতর্কতা ও আইনি সচেতনতা
এই ঘটনা থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা পাওয়া যায়—বিয়ের মিথ্যা প্রতিশ্রুতি বা ক্যারিয়ারের লোভ দেখিয়ে নারীদের শোষণ করার চেষ্টা যুগ যুগ ধরে চলছে। নারীদের উচিত যেকোনো সম্পর্কে সতর্ক থাকা এবং অবৈধ প্রস্তাব বা চাপের মুখে নতি না স্বীকার করা।
আইনি সহায়তা নিন
যদি কেউ এমন পরিস্থিতির শিকার হন, তাহলে তথ্য গোপন না করে দ্রুত পুলিশ বা আইনি সহায়তা নেওয়া উচিত। ভারতে নারী হেল্পলাইন নম্বর (১০৯১) এবং সাইবার ক্রাইম সেল প্রতিনিয়ত এমন অভিযোগ নিয়ে কাজ করছে।
শেষ কথা
এজাজ খানের বিরুদ্ধে অভিযোগটি যদি সত্য প্রমাণিত হয়, তাহলে এটি বলিউডের আরেকটি মুহূর্ত হতে পারে। তবে, তদন্ত শেষ হওয়ার আগে কোন পক্ষকে দোষারোপ না করাই শ্রেয়।
আরও পড়ুন: শামীম হাসান সরকারের বিরুদ্ধে অভিনেত্রীর অভিযোগ: বিতর্কের খতিয়ান
এই ঘটনা আমাদের নারী নিরাপত্তা এবং ক্যারিয়ারের লোভে শোষণ সম্পর্কে সচেতন হতে শেখায়। আশা করা যায়, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা দ্রুত ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবে।
আপনার মতামত জানান কমেন্টে—এই ধরনের ঘটনায় নারীদের কীভাবে আরও সচেতন করা যায়?