জীবন বাঁচানোর তাগিদে মানুষ কত কিছুই না করে! সম্প্রতি ইরান থেকে সড়কপথে পাকিস্তানে আশ্রয় নিয়েছেন ২৮ জন বাংলাদেশি নাগরিক। তাদের এই যাত্রা ছিল অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং কষ্টসাধ্য। বিভিন্ন কারণে ইরানে আটকা পড়া এই বাংলাদেশিরা শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানের মাটিতে পা রাখতে সক্ষম হয়েছেন।
কেন ইরান থেকে পালালেন বাংলাদেশিরা?
ইরানে কর্মসংস্থান বা অন্যান্য কারণে গিয়েছিলেন এই প্রবাসীরা। কিন্তু সেখানে তারা নানা সমস্যার মুখোমুখি হন:
বৈধ কাগজপত্রের অভাব – অনেকেরই ভিসা বা কাজের অনুমতি ছিল না, ফলে আইনি ঝামেলায় পড়তে হয়।
অর্থনৈতিক সংকট – কাজ না পাওয়া বা বেতন না দেওয়ার কারণে জীবনযাপন কঠিন হয়ে পড়ে।
নির্যাতন ও শোষণ – কিছু ক্ষেত্রে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে।
এসব কারণে তারা ইরান ছেড়ে পাকিস্তানে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
কীভাবে পাকিস্তানে পৌঁছালেন?
মানবিক সহায়তার মাধ্যমে তাদের পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। যাত্রাপথে তাদের প্রচণ্ড কষ্ট সহ্য করতে হয়েছে:
দীর্ঘ ও বিপজ্জনক সফর – সীমান্ত পাড়ি দেওয়া সহজ ছিল না, নিরাপত্তা ঝুঁকি ছিল।
অনিশ্চয়তা – কোথায় যাবেন, কীভাবে বাঁচবেন, তা নিয়ে ছিল চিন্তা।
নারী ও শিশুদের উপস্থিতি – তাদের জন্য যাত্রা ছিল আরও কঠিন।
ছবিতে দেখা গেছে, তাদের চোখে-মুখে ক্লান্তি, তবে বেঁচে থাকার স্বস্তিও রয়েছে।
পরিবারের আবেদন ও সামাজিক উদ্বেগ
এই প্রবাসীদের পরিবারের সদস্যরা সরকারের কাছে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। তারা চান তাদের স্বজনদের নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনা হোক।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
সরকারি পদক্ষেপ কী হওয়া উচিত?
এই ঘটনা থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা নেওয়া যায়:
প্রবাসীদের নিরাপত্তা জোরদার – বৈধ পথে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা এবং অবৈধ অভিবাসন রোধ করতে হবে।
দ্রুত প্রত্যাবাসন – আটকে পড়া বাংলাদেশিদের দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা উচিত।
সচেতনতা বৃদ্ধি – বিদেশে কাজের ক্ষেত্রে সঠিক তথ্য ও আইনি সহায়তা দেওয়া জরুরি।
উপসংহার
এই ২৮ জন বাংলাদেশির যাত্রা শুধু একটি ঘটনা নয়, এটি আমাদের সমাজের একটি বড় চ্যালেঞ্জের প্রতিচ্ছবি। বিদেশে কর্মরত প্রতিটি বাংলাদেশির নিরাপত্তা ও মর্যাদা রক্ষায় সরকার ও সংশ্লিষ্ট সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। আশা করা যায়, দ্রুত তাদের দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে এবং ভবিষ্যতে এমন ঘটনা যেন না ঘটে, সে জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: প্রবাস জীবন: কী, কেন, কোথায় ও কিভাবে?
মন্তব্য করুন:
আপনার কী মনে হয়? কিভাবে আরও নিরাপদে প্রবাসীদের জন্য কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা যায়? নিচে কমেন্টে জানান।