ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলায় দুই গ্রামের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনায় ইউএনও, ওসি ও স্থানীয়দের মধ্যে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। পুরনো বিরোধের জেরে এই হানাহানি ছড়িয়ে পড়ায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
ঘটনার সূত্রপাত
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার সন্ধ্যায় সরাইল উপজেলার চানমণি পাড়া গ্রামের হালেমা বেগম তার ছেলে সাইফুল ইসলামকে নিয়ে হালুয়াপাড়া গ্রাম দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। পথে মোগলটুলা গ্রামের তৌহিদুল ইসলাম হালেমার দিকে তাকালে এ নিয়ে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। এক পর্যায়ে সাইফুল ও তৌহিদুলের মধ্যে হাতাহাতি বাঁধে, যা পরে দুই গ্রামের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষে রূপ নেয়।
পুলিশ ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপ
সংঘর্ষের খবর পেয়ে সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোশাররফ হোসেন ও থানার ওসি ঘটনাস্থলে পৌঁছালে তাদেরও লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোড়া হয়। এতে ইউএনও, ওসিসহ প্রায় ২০ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর বলে জানা গেছে।
ইউএনও মোশাররফ হোসেন বলেন, “সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে আমার হাঁটুতে ইটের আঘাত লাগে। বর্তমানে চিকিৎসাধীন আছি। স্থানীয়দের মধ্যে পুরনো দ্বন্দ্ব ছিল, যা আজ সহিংস রূপ নিয়েছে।”
পুরনো বিরোধের জের
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তপন সরকার জানান, দুই মাস আগে মোবাইল চার্জার কেনাকে কেন্দ্র করে চানমণি পাড়া ও মোগলটুলা গ্রামবাসীর মধ্যে বিরোধ শুরু হয়। সেই উত্তেজনা থেকেই বুধবারের সংঘর্ষের সূত্রপাত।
তিনি আরও বলেন, “পুলিশ ও সেনাবাহিনীর তৎপরতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। তবে অনেকেই এখনও আত্মগোপনে রয়েছে।”
বর্তমান অবস্থা
সংঘর্ষের পর এলাকায় পুলিশ ও সেনাবাহিনীর টহল বাড়ানো হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন দুই পক্ষের মধ্যে শান্তি আলোচনার চেষ্টা চালাচ্ছে। আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও অন্যান্য হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
শেষ কথা
স্থানীয় সংঘাত সহিংসতায় রূপ নেওয়ায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলায় শান্তি ফিরিয়ে আনতে প্রশাসন কঠোর অবস্থান নিয়েছে। পুরনো দ্বন্দ্বের সমাধান না হওয়ায় এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও প্রশাসনের সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন।
এই ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। আশা করা যায়, দ্রুত আইনশৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার করে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ফিরে আসবে।
আরও পড়ুন: ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে পাকিস্তানে ভারত হামলা করতে পারে- পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী
#ব্রাহ্মণবাড়িয়া #সরাইল #গ্রাম্য_সংঘর্ষ #ইউএনও #পুলিশ #স্থানীয়_উত্তেজনা
মন্তব্য করুন: আপনার এলাকায় কি এমন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে? কীভাবে সমাধান হয়েছে? নিচে কমেন্টে শেয়ার করুন।