বরিশালে এক তরুণীকে ধর্ষণের মামলা তুলে নিতে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিএনপির সাবেক এমপি ও বরিশাল জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবুল হোসেন খানের বিরুদ্ধে। শনিবার (১০ মে) বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী তরুণী।
ঘটনার বিস্তারিত
ভুক্তভোগী তরুণীর বক্তব্য অনুযায়ী, বাকেরগঞ্জ পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়ক রুহুল আমিন বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে দীর্ঘদিন তার সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখেন। পরে প্রতারিত হয়ে তিনি গত ২২ জানুয়ারি বাকেরগঞ্জ থানায় রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা দায়ের করেন। কিন্তু চার মাস পার হওয়ার পরও পুলিশ আসামিকে গ্রেফতার করেনি।
এরই মধ্যে গত ৭ মে সাবেক এমপি আবুল হোসেন খান তরুণী ও তার মাকে নিজ বাসায় ডেকে নিয়ে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন বলে দাবি করা হয়। তরুণীর অভিযোগ, সেখানে বাকেরগঞ্জ থানার নবাগত ওসি আবুল কালাম আজাদ ও তদন্ত কর্মকর্তা এসআই তোফাজ্জেল উপস্থিত ছিলেন। সাবেক এমপি তাকে সরাসরি হুমকি দিয়ে বলেন, “মামলা তুলে না নিলে সকালেই ফাইনাল রিপোর্ট (গোডেন রিপোর্ট) দিয়ে দেওয়া হবে।”
এছাড়াও, বাকেরগঞ্জ পৌর বিএনপির সভাপতি নাসির জোমাদ্দার ও ২ নম্বর ওয়ার্ড সভাপতি শেখ মাহমুদুর রহমান রিমন তার বাড়িতে গিয়ে মামলা প্রত্যাহারের জন্য হুমকি দিয়েছিলেন বলে জানান তিনি।
ভুক্তভোগীর দাবি
সংবাদ সম্মেলনে তরুণী নিম্নোক্ত দাবিগুলো উত্থাপন করেন:
তার ও পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করা।
অভিযুক্ত রুহুল আমিনকে দ্রুত গ্রেফতার করা।
হুমকিদাতাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া।
তিনি পুলিশের আইজিপি, বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি ও প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
বিএনপি নেতার প্রতিক্রিয়া
এ ঘটনায় অভিযুক্ত আবুল হোসেন খান বলেন, “এটা হুমকি নয়, আলোচনা ছিল। তরুণী ও তার পরিবারকে আমার বাসায় ডেকে এনে বিএনপি নেতাকর্মী ও পুলিশের উপস্থিতিতে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করা হয়েছে।”
জনমত ও আইনি পদক্ষেপের দাবি
এ ধরনের ঘটনায় ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে সামাজিক সচেতনতা ও প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ জরুরি। ভুক্তভোগীর পাশে দাঁড়িয়ে আইনি প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার দাবি জানাচ্ছে স্থানীয় মানবাধিকার সংগঠনগুলো।
সামাজিক মাধ্যম ও গণমাধ্যমের ভূমিকা
গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমের সক্রিয় ভূমিকা ন্যায়বিচার প্রক্রিয়াকে গতিশীল করতে পারে। এই ঘটনাটি যাতে কোনোভাবেই ঢাকা না পড়ে, সে জন্য সবার সতর্ক দৃষ্টি রাখা প্রয়োজন।
মন্তব্যঃ
ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধের মামলায় হুমকি-ধামকি দেওয়া কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। ভুক্তভোগীর নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত হস্তক্ষেপ কাম্য।
আরও পড়ুন: শেওড়াপাড়ায় নৃশংস হত্যাকাণ্ড: দুই বোনকে শিল-পাটা ও ছুরিকাঘাতে হত্যা
আপনার মতামত জানান:
এই ঘটনা সম্পর্কে আপনার মতামত কি? নিচের কমেন্ট বক্সে শেয়ার করুন।