চাঁদপুরের কচুয়ায় এক মায়ের নির্মম পরিণতি
চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলায় এক গৃহবধূ তার নিখোঁজ ছেলেকে খুঁজতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। এ ঘটনায় মো. সুমন (৩১) ও মো. মহসিন (২৮) নামের দুই যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (২ মে) তাদের আদালতে সোপর্দ করা হয়।
ঘটনার বিস্তারিত
গত ১৭ এপ্রিল সন্ধ্যায় ৩০ বছর বয়সী এক মা তার ১০ বছরের ছেলেকে খুঁজতে বাড়ি থেকে বের হন। ছেলেটি স্থানীয় একটি মাদ্রাসা থেকে নিখোঁজ হওয়ায় তিনি আশেপাশের এলাকায় অনুসন্ধান শুরু করেন। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে তিনি মুন্সিবাড়ি নামক একটি স্থানে যান। সেখানে অভিযুক্তরা তাকে জানায় যে তার ছেলে একটি পরিত্যক্ত ঘরে আটকা পড়েছে।
মায়ের মমতায় ব্যাকুল হয়ে তিনি তাদের কথায় বিশ্বাস করে ওই ঘরে প্রবেশ করেন। কিন্তু সেখানে গিয়ে তিনি এক ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি হন। দুই যুবক তাকে জোরপূর্বক আটকে রেখে ধর্ষণ করে।
অপরাধীদের গ্রেফতার ও আইনি প্রক্রিয়া
ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর লজ্জা ও সম্মানহানির ভয়ে মা প্রথমে বিষয়টি গোপন রাখেন। কিন্তু কয়েকদিন পর স্থানীয়দের মধ্যে খবর ছড়িয়ে পড়লে তিনি পরিবারের পরামর্শে ৩০ এপ্রিল, অর্থাৎ ঘটনার ১৩ দিন পর, কচুয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।
পুলিশ অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে এবং বৃহস্পতিবার ভোরে রহিমানগর এলাকা থেকে অভিযুক্ত সুমন ও মহসিনকে গ্রেফতার করে। তাদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
কচুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আজিজুল ইসলাম জানান, “গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। তাদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে এবং আদালত তাদের জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছেন।”
নিখোঁজ ছেলের সন্ধান
ধর্ষণের শিকার মা পুলিশকে জানিয়েছেন, তার নিখোঁজ ছেলেটি পরে মাদ্রাসা প্রাঙ্গণ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। তবে ছেলেকে খুঁজতে গিয়ে যে মর্মান্তিক ঘটনার শিকার হতে হলো, তা নিঃসন্দেহে একটি পরিবারের জন্য চরম দুঃখ ও লজ্জার বিষয়।
সমাজে নারী নিরাপত্তার প্রশ্ন
এ ধরনের ঘটনা আমাদের সমাজে নারী নিরাপত্তা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলে ধরে। একজন মা তার সন্তানের সন্ধানে বেরিয়ে কীভাবে এমন নৃশংসতার শিকার হলেন? অপরাধীরা কীভাবে এত নির্লজ্জ হয়ে উঠল?
নারী ও শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা এবং সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি করা এখন সময়ের দাবি। পাশাপাশি, এমন ঘটনায় আক্রান্তদের ন্যায়বিচার পেতে সাহসী হতে হবে এবং দেরি না করে আইনের আশ্রয় নিতে হবে।
আরও পড়ুন: দিনাজপুরে মাদ্রাসা পরিচালকের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা: বিচারের অপেক্ষায় ন্যায়বিচার
মন্তব্য করুন
আপনার কী মনে হয়? নারী নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমাদের কী কী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত? নিচে কমেন্ট করে আপনার মতামত জানান।
#নারীনিরাপত্তা #ধর্ষণেরবিরুদ্ধে #চাঁদপুর #অপরাধনিয়ন্ত্রণ #সামাজিকসচেতনতা