যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্ক নীতিতে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি খাত বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে। আগামী ১ আগস্ট থেকে বাংলাদেশসহ ১৪টি দেশের পণ্যের ওপর ৩৫% অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের জন্য মার্কিন বাজারে টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়বে।
কেন বাড়ছে শুল্ক?
ট্রাম্প প্রশাসনের মূল লক্ষ্য হলো যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি কমানো। বাংলাদেশের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ভারসাম্যও এই নীতির অংশ। গত এপ্রিলে প্রথমে ৩৭% শুল্ক ঘোষণা করা হলেও আলোচনার পর তা সাময়িকভাবে ৩৫%-এ নামিয়ে আনা হয়। তবে এই হারও বাংলাদেশের রপ্তানিকারকদের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে কী প্রভাব পড়বে?
যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের সবচেয়ে বড় রপ্তানি গন্তব্য। দেশটিতে বাংলাদেশের মোট পোশাক রপ্তানির ১৮% (প্রায় ৮.৬ বিলিয়ন ডলার) যায়। নতুন শুল্ক কার্যকর হলে:
দাম বেড়ে যাবে: বর্তমানে গড়ে ১৫% শুল্ক দেওয়া হচ্ছে। নতুন শুল্ক যোগ হলে তা ৫০%-এ পৌঁছাবে, ফলে পণ্যের দাম ৩০-৪০% বাড়তে পারে।
প্রতিযোগিতা হারাবে বাংলাদেশ: ভিয়েতনাম (২০% শুল্ক), ভারত ও পাকিস্তানের তুলনায় বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়বে।
রপ্তানি কমবে: দাম বাড়ার কারণে মার্কিন ক্রেতারা বাংলাদেশের বদলে অন্য দেশ থেকে পোশাক আমদানি করতে পারেন।
শিল্পের উপর চাপ: অনেক গার্মেন্টস কারখানা লোকসানের মুখে পড়তে পারে, যা কর্মসংস্থানেও প্রভাব ফেলবে।
কী করা যেতে পারে?
বিশেষজ্ঞরা কয়েকটি সমাধান প্রস্তাব করেছেন:
যুক্তরাষ্ট্রের সাথে জোরালো আলোচনা: সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা বাড়াতে হবে।
বিকল্প বাজার অনুসন্ধান: ইউরোপ, জাপান ও অন্যান্য বাজারে রপ্তানি বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া।
উৎপাদন খরচ কমানো: শিল্পের আধুনিকায়ন ও দক্ষতা বাড়িয়ে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়ানো।
বাণিজ্য চুক্তি নিশ্চিত করা: যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বিশেষ শুল্ক ছাড়ের চুক্তির জন্য চাপ প্রয়োগ করা।
শেষ কথা
ট্রাম্পের শুল্ক নীতির প্রভাব বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গভীরভাবে পড়তে পারে। তবে সঠিক পরিকল্পনা ও কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে এই সংকট কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। সরকার, শিল্প মালিক ও অর্থনীতিবিদদের সমন্বিত উদ্যোগই পারে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে।
আরও পড়ুন: নাসিরনগরে সহিংসতা: ছাত্রদল নেতার মৃত্যুতে অস্থিরতা, শতাধিক পরিবার গৃহহারা
আপনার মতামত জানান: ট্রাম্পের শুল্ক নীতির প্রভাব নিয়ে আপনি কী ভাবছেন? নিচে কমেন্ট করে শেয়ার করুন!