শিক্ষার্থীদের টানা আন্দোলনের মুখে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) দাবি মেনে নিয়েছে সরকার। গত তিন দিন ধরে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে অবস্থান ও বিক্ষোভের পর অবশেষে শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণের ঘোষণা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম সন্ধ্যায় কাকরাইলে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের কাছে গিয়ে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান।
শিক্ষার্থীদের কী দাবি ছিল?
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রধান দাবিগুলো ছিল নিম্নরূপ:
আবাসন সংকট নিরসন: ৭০% শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন বৃত্তি চালু এবং অস্থায়ী হল নির্মাণ।
বাজেট কাটছাঁট বন্ধ: বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবিত বাজেট পূর্ণাঙ্গভাবে অনুমোদন।
দ্বিতীয় ক্যাম্পাস নির্মাণ: দ্রুত একনেক সভায় পাস করে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ ত্বরান্বিত করা।
হামলাকারীদের বিচার: শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া।
আন্দোলনের পটভূমি
বুধবার দুপুরে জবি শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস থেকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের দিকে ‘লংমার্চ’ শুরু করে। পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে তারা কাকরাইল মসজিদের সামনে জমায়েত হয়। একপর্যায়ে পুলিশের সাথে সংঘর্ষে টিয়ার শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয়, যাতে বহু শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও সাংবাদিক আহত হন।
বৃহস্পতিবার শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছউদ্দীন ফেসবুক লাইভে আন্দোলনে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান। তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে শতাধিক শিক্ষার্থী ও শিক্ষক কাকরাইলে সমবেত হন। রাত ১২টায় গণ-অনশনের ঘোষণা দেওয়া হয়।
সরকারের প্রতিক্রিয়া
অবশেষে, সরকার শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেয়। উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম ঘোষণা দেন:
বাজেট বৃদ্ধি: বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট বাড়ানো হয়েছে।
আবাসন সমস্যার সমাধান: দ্রুত অস্থায়ী হল নির্মাণ শুরু হবে।
দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ এগিয়ে নেওয়া: ইতোমধ্যে নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে।
হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা: পুলিশ দুঃখ প্রকাশ করেছে এবং ৭ দিনের মধ্যে ব্যবস্থা নেবে বলে জানানো হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের প্রতিক্রিয়া
যদিও অনশন ভাঙা হয়েছে, কিছু শিক্ষার্থী লিখিত নিশ্চয়তা না পাওয়া পর্যন্ত অবস্থান চালিয়ে যান। ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ আশ্বাস দেন, “আমরা শিক্ষার্থীদের স্বার্থেই কাজ করছি। সব দাবি বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
শেষ কথা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন শিক্ষার অধিকার ও সুযোগ-সুবিধা নিয়ে সচেতনতার নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে। সরকারের এই সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থীদের জন্য একটি বড় অর্জন। তবে, প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে নজরদারি জরুরি।
আপনার মতামত জানান:
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন ও সরকারের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে আপনার মতামত কমেন্টে জানাতে পারেন। শিক্ষার উন্নয়নে একসাথে কাজ করাই হোক আমাদের লক্ষ্য।
আরও পড়ুন: ধর্ষণের নির্মম শাস্তি: কলেজ ছাত্রীকে তুলে নিয়ে দলবেঁধে ধর্ষণ, ৩ জনের যাবজ্জীবন
#জগন্নাথবিশ্ববিদ্যালয় #শিক্ষার্থীআন্দোলন #সরকারিসিদ্ধান্ত #শিক্ষারঅধিকার