প্রস্রাব আমাদের শরীরের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া। এটি কিডনি দ্বারা ফিল্টার হওয়া তরল বর্জ্য, যা শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয়। কিন্তু আপনি কি জানেন, দিনে কতবার প্রস্রাব করা স্বাভাবিক? প্রস্রাবের পরিমাণ বা ফ্রিকোয়েন্সি অস্বাভাবিক হলে তা বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যার ইঙ্গিত দিতে পারে। চলুন বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
দিনে কতবার প্রস্রাব করা স্বাভাবিক?
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দিনে ৬-৭ বার প্রস্রাব করা স্বাভাবিক। তবে এটি নির্ভর করে:
পানি বা তরল খাবারের পরিমাণের উপর
শারীরিক কার্যকলাপ
আবহাওয়া ও ঘামের পরিমাণ
কিছু নির্দিষ্ট ওষুধ বা স্বাস্থ্য অবস্থার উপর
সাধারণত, দিনে ৪ থেকে ১০ বার প্রস্রাব করাকে স্বাভাবিক ধরা হয়। কিন্তু এর চেয়ে বেশি বা কম হলে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।
কখন প্রস্রাবের ফ্রিকোয়েন্সি অস্বাভাবিক বলে ধরা হয়?
দিনে ১০ বারের বেশি প্রস্রাব হলে (পলিইউরিয়া)
প্রতি ৩০ মিনিটে প্রস্রাবের বেগ আসলে
দিনে ৪ বারের কম প্রস্রাব হলে
প্রস্রাবের সময় ব্যথা বা জ্বালাপোড়া হলে
এসব লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
রাতে কতবার প্রস্রাব হওয়া স্বাভাবিক?
রাতে ঘুমের মধ্যে ১-২ বার প্রস্রাব করা স্বাভাবিক। কিন্তু যদি প্রতি ঘণ্টায় প্রস্রাবের বেগ আসে, তবে তা নকচুরিয়া (Nocturia) নামক সমস্যার ইঙ্গিত দেয়।
কে বেশি নকচুরিয়ায় আক্রান্ত হয়?
বয়স্ক ব্যক্তি (বিশেষ করে ৫০ বছরের বেশি বয়সী)
গর্ভবতী নারী বা মেনোপজ পরবর্তী নারী
ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপের রোগী
প্রোস্টেট বড় হওয়া পুরুষ
হৃদরোগ বা কিডনির সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তি
যারা অতিরিক্ত ক্যাফেইন বা অ্যালকোহল সেবন করেন
প্রস্রাবের সমস্যা হলে কী করবেন?
১. পর্যাপ্ত পানি পান করুন, তবে অতিরিক্ত নয়।
২. ক্যাফেইন ও অ্যালকোহল কমিয়ে দিন।
৩. মূত্রাশয়কে ট্রেন করুন—প্রস্রাবের বেগ আসলে কিছুক্ষণ ধরে রাখার চেষ্টা করুন।
৪. পেলভিক ফ্লোর এক্সারসাইজ (কেগেল এক্সারসাইজ) করুন।
৫. ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ বা কিডনির সমস্যা থাকলে নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
৬. রাতে শোয়ার আগে পানি কম পান করুন।
কখন ডাক্তার দেখাবেন?
প্রস্রাবে রক্ত গেলে
তীব্র ব্যথা বা জ্বালাপোড়া হলে
ঘন ঘন প্রস্রাবের সমস্যা দীর্ঘদিন থাকলে
প্রস্রাব ধরে রাখতে না পারলে
সর্বোপরি, প্রস্রাবের স্বাভাবিক ফ্রিকোয়েন্সি বজায় রাখতে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন জরুরি।
আপনার প্রস্রাবের অভ্যাস কেমন? কমেন্টে জানান। যদি এই তথ্য উপকারী লাগে, তাহলে শেয়ার করতে ভুলবেন না!
আরও পড়ুন: করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জরুরি নির্দেশনা – যা জানা জরুরি