বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মফিজুর রহমানের পদত্যাগ দাবি করেছেন ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় ফেল করা প্রার্থীরা। তাদের অভিযোগ, চেয়ারম্যান ইচ্ছাকৃতভাবে যোগ্য প্রার্থীদের ফেল করিয়েছেন, আবার তার ব্যক্তিগত সুপারিশে কিছু প্রার্থী পাস করেছেন। এই বৈষম্যমূলক আচরণের প্রতিবাদে তারা মঙ্গলবার এনটিআরসিএ কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেছেন।
অনিয়মের অভিযোগ ও আন্দোলনের বিস্তৃতি
গত ১৪ জুন, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ফেল করা প্রার্থীরা এনটিআরসিএ চেয়ারম্যানকে “ফ্যাসিস্টের দোসর” আখ্যা দিয়ে তার পদত্যাগ দাবি করেন। এরপর থেকে তারা ফলাফল পুনর্মূল্যায়নের দাবিতে মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন।
প্রার্থীদের প্রধান দাবিগুলো হলো:
অস্বাভাবিক কম পাসের হারযুক্ত বোর্ডগুলো পুনরায় তদন্ত করা।
ভাইভায় অংশগ্রহণকারী সব প্রার্থীকে সনদ প্রদান করা।
বিভিন্ন বোর্ডে পাস-ফেলের হারে বিশাল ব্যবধান তদন্ত করা।
এক প্রার্থী জানান, “কোনো বোর্ডে ৩০ জনের মধ্যে ২৯ জন ফেল, আবার কোথাও ২৭ জন ফেল ও মাত্র ৩ জন পাস। এমন বৈষম্যের কোনো যৌক্তিকতা নেই।”
সংশোধিত ফল ও নতুন প্রশ্ন
গত সোমবার একটি সংশোধিত ফল প্রকাশ করা হয়, যাতে ১১৩ জন অতিরিক্ত প্রার্থী পাস করেছেন। এনটিআরসিএ কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, ২৩ মার্চ ভাইভায় অনুপস্থিত প্রার্থীদের পুনরায় পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল, কিন্তু কারিগরি ত্রুটির কারণে তাদের ফল মূল ফলাফলে যুক্ত হয়নি।
তবে, ফেল করা প্রার্থীরা এই ব্যাখ্যাকে মানতে নারাজ। তাদের অভিযোগ, “চেয়ারম্যানের যশোরের বাড়িতে গিয়ে অনেকে সুবিধা পেয়েছেন। আমরা বৈষম্যের শিকার হয়েছি।”
প্রতিবাদ অব্যাহত
প্রার্থীরা এনটিআরসিএর দফতরে অভিযোগ দায়ের করতে যাচ্ছেন এবং রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তাদের বক্তব্য, “যতদিন না আমাদের ন্যায্য দাবি মেনে নেওয়া হচ্ছে, ততদিন আমরা মাঠে থাকব।”
শিক্ষক নিবন্ধন নিয়ে কেন এত বিতর্ক?
শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা নিয়ে গত কয়েক বছর ধরে নিয়মিত অভিযোগ উঠছে। প্রধান অভিযোগগুলো হলো:
পাস-ফেলের হার নিয়ে অস্পষ্টতা
ভাইভা বোর্ডে স্বজনপ্রীতি
কোনো কোনো বোর্ডে ইচ্ছাকৃতভাবে কম পাস করানো
এমন পরিস্থিতিতে, এনটিআরসিএর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা জরুরি হয়ে পড়েছে।
দর্শকদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও এনটিআরসিএর প্রতি দর্শকদের অনুরোধ:
ফলাফল পুনর্মূল্যায়নের দাবি যৌক্তিক কি না, তা খতিয়ে দেখুন।
ভাইভা প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করুন।
প্রার্থীদের অভিযোগের দ্রুত সমাধান করুন।
আরও পড়ুন: সরকারি চাকরিজীবী ও অবসরভোগীদের জন্য সুখবর: বেতন ও পেনশন ভাতা বৃদ্ধি