টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে এক পিতার হাতে নিজ কন্যার ধর্ষণের মর্মান্তিক ঘটনায় সমাজ once again স্তম্ভিত। স্কুলগামী এক কিশোরীকে ঘুমের মধ্যে জোরপূর্বক ধর্ষণের অভিযোগে তারই বাবাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এই নৃশংস ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে রাগ ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।
ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ
ঘটনাটি ঘটেছে ধনবাড়ী উপজেলার পৌরসভার কয়াপাড়া এলাকায়। ১৪ বছর বয়সী স্কুলছাত্রী (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) স্থানীয় সাকিনা মেমোরিয়াল গার্লস হাই স্কুলের অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। অভিযোগ রয়েছে, গত ২৫ এপ্রিল রাতে সে ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় তার বাবা শফিকুল ইসলাম (৫২) তাকে ধর্ষণ করে।
কিশোরীর নানা আমজাদ হোসেন জানান, শুধু ধর্ষণই নয়, শফিকুল ও তার প্রথম স্ত্রী ও সন্তানরা মিলে মেয়েটিকে নিয়মিত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করত। ৩০ এপ্রিল তারা তাকে চেয়ারের সাথে বেঁধে মারধর করে গুরুতর আহত করে। পরে তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
মামলা ও গ্রেপ্তার
নাতনির ওপর এই অত্যাচারের কথা জানার পর আমজাদ হোসেন ৪ মে ধনবাড়ী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। পরে মেয়েটি ধর্ষণের কথা প্রকাশ করলে, ৮ মে আনুষ্ঠানিক মামলা দায়ের করা হয়। একই দিন পুলিশ অভিযুক্ত শফিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে টাঙ্গাইল জেল হাজতে পাঠায়।
ধনবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ এস. এম. শহিদুল্লাহ সাংবাদিকদের জানান, মামলাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে দায়ের করা হয়েছে। কিশোরীর মেডিক্যাল পরীক্ষা শেষে আরও বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে।
সমাজের নষ্ট মূল্যবোধের প্রতিচ্ছবি
এমন ঘটনা শুনলে যে কারও মন বিষাদে ভরে যায়। একজন পিতা কীভাবে তার সন্তানের ওপর এমন পাশবিক অত্যাচার করতে পারে? এটি শুধু একটি ধর্ষণের ঘটনা নয়, এটি আমাদের সমাজের নৈতিক অধঃপতনের চরম উদাহরণ। শিশু ও নারী নির্যাতনের মতো জঘন্য অপরাধ দিন দিন বেড়েই চলেছে, যা সমাজের জন্য এক ভয়াবহ সংকেত।
ন্যায়বিচার ও সচেতনতা জরুরি
এই ঘটনায় কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। শুধু আইনের কঠোর প্রয়োগই নয়, সমাজের প্রতিটি স্তরে নারী ও শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। পরিবার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় নেতাদের এগিয়ে আসতে হবে নৈতিক শিক্ষা প্রদানের জন্য।
শেষ কথা
ধনবাড়ীর এই ঘটনা আমাদেরকে আবারও মনে করিয়ে দিচ্ছে যে, নারী ও শিশু নির্যাতন রোধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া সময়ের দাবি। আশা করা যায়, দোষী ব্যক্তি দ্রুততম সময়ের মধ্যে কঠোর শাস্তি পাবে এবং ভবিষ্যতে এমন নিষ্ঠুরতা যেন আর কখনও না ঘটে, তার জন্য সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।
আরও পড়ুন: মেয়ে তার বাবাকে খুন করলো – নেপথ্যে কারন যৌন নির্যাতন
আপনার মতামত জানান: এমন ঘটনায় আমাদের সমাজ কীভাবে আরও সচেতন হতে পারে? নিচে কমেন্ট করে আপনার ভাবনা শেয়ার করুন।