সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলায় এক এইচএসসি পরীক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে এক পুলিশ সদস্যকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ধর্মপাশা চৌকি আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রিয়াজুল কাউসারের আদেশে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য আইনুল হককে জেলে প্রেরণ করা হয়। এই মামলায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে অভিযুক্তকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।
ঘটনার সংক্ষিপ্ত বিবরণ
সোমবার (৩০ জুন) রাতে ভুক্তভোগী ছাত্রী ধর্মপাশা থানায় আইনুল হকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। অভিযোগ অনুযায়ী, আইনুল হক থানার সামনে দিয়ে যাতায়তের সময় ছাত্রীর সঙ্গে পরিচয় হয় এবং ধীরে ধীরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। গত ২৬ জুন, তিনি তাকে সুনামগঞ্জ শহরের একটি আবাসিক হোটেলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেন। পরে ছাত্রী বিয়ের দাবি করলে আইনুল হক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
পরবর্তীতে ছাত্রী তার পরিবারকে ঘটনা জানান এবং আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য আইনুল হক সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার বাসিন্দা এবং বিবাহিত ব্যক্তি হওয়ায় এই ঘটনায় সমাজে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
আইনুল হকের গ্রেফতার ও আদালতের রায়
ধর্মপাশা থানার ওসি মোহাম্মদ এনামুল হক জানান, আইনুল হককে গ্রেফতার করে মঙ্গলবার (১ জুলাই) আদালতে হাজির করা হয়। আদালত তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন। এছাড়া, ভুক্তভোগী ছাত্রীকে মেডিকেল পরীক্ষার জন্য সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সমাজে নারী নির্যাতন ও আইনের শাসন
এই ঘটনা পুনরায় সমাজে নারী নির্যাতনের ভয়াবহতা এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের চিত্র ফুটে তুলেছে। পুলিশ সদস্য হওয়ার সুযোগ নিয়ে একজন নাবালিকা পরীক্ষার্থীর সঙ্গে প্রতারণা ও ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধ করা হয়েছে, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
এই মামলায় দ্রুত বিচার নিশ্চিত করা এবং ভুক্তভোগীকে ন্যায়বিচার দেওয়া জরুরি। পাশাপাশি, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের কঠোর নৈতিকতা ও শিষ্টাচার মেনে চলা উচিত, যাতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে।
সামাজিক সচেতনতা ও প্রতিরোধ
নারী ও শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। পরিবার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে নৈতিক শিক্ষার পাশাপাশি আইনি সচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন। কোনো ধরনের যৌন হয়রানি বা নির্যাতনের শিকার হলে ভুক্তভোগীকে অবশ্যই নিকটতম থানায় অভিযোগ দায়ের করতে হবে এবং আইনি সহায়তা নিতে হবে।
উপসংহার
সুনামগঞ্জের এই ঘটনা আমাদের সমাজের অন্ধকার দিককে আবারও উন্মোচন করেছে। আশা করা যায়, দোষী ব্যক্তি কঠোর শাস্তি পাবে এবং ভুক্তভোগী ন্যায়বিচার পাবে। নারী ও শিশু সুরক্ষায় সরকারি-বেসরকারি সংস্থাগুলোকে আরও সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে, যাতে কোনো নারীই আর এমন নির্মমতার শিকার না হয়।
আরও পড়ুন: এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের শাটডাউন প্রত্যাহার: অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক সিদ্ধান্ত
#নারী_নির্যাতন #ধর্ষণ_মামলা #সুনামগঞ্জ #পুলিশ_সদস্য #ন্যায়বিচার