গাজীপুরের শ্রীপুরে এক পোশাক শ্রমিকের উপর সংঘবদ্ধ ধর্ষণের মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় তিন সন্ত্রাসী ডিউটি শেষে বাড়ি ফেরার পথে নারীটিকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে নির্মম নির্যাতন চালায়। ঘটনাটি ঘটেছে তিন দিন আগে, তবে ভুক্তভোগী পরিবারের বিরুদ্ধে চাপ ও হুমকির কারণে মামলা দায়ের করতে বিলম্ব হয়েছে।
ঘটনার বিবরণ
৩৫ বছর বয়সী ওই নারী শ্রীপুর উপজেলার একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। গত মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে কারখানা থেকে ফেরার পথে তিন আততায়ী—সুমন (২৫), আল আমিন (৩০) ও শান্ত (২২)—তাকে পেছন থেকে জাপটে ধরে। চিৎকার করায় তারা তার মুখ গামছা দিয়ে বেঁধে ফেলে এবং একটি বনে নিয়ে যায়। সেখানে তারা দলবদ্ধভাবে তাকে ধর্ষণ করে এবং মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করে। পরে তাকে হত্যার হুমকি দিয়ে পালিয়ে যায়।
পরিবারের সদস্যদের সহযোগিতায় নারীটিকে উদ্ধার করা হয়। তবে ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্তরা ভুক্তভোগী পরিবারকে থানায় যেতে বাধা দিচ্ছিল। এমনকি তারা স্থানীয়ভাবে সালিশের মাধ্যমে মামলা থামানোর চেষ্টা করে। কিন্তু ন্যায়বিচারের দাবিতে পরিবার অবিচল থাকে।
মামলা ও পুলিশের তদন্ত
ঘটনার তিন দিন পর, শুক্রবার রাতে নারীটির স্বামী শ্রীপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। থানার ওসি মোহাম্মদ আবদুল বারিক জানান, মামলার প্রক্রিয়া চলছে এবং অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের বিশেষ টিম কাজ করছে। এছাড়াও, যারা গোপনে সালিশের মাধ্যমে মামলা মেটানোর চেষ্টা করেছিল, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সমাজে নারী নিরাপত্তার প্রশ্ন
এ ধরনের ঘটনা শুধু একটি পরিবারকে ধ্বংস করে না, সমগ্র সমাজে আতঙ্ক ছড়ায়। পোশাক শিল্পে কর্মরত নারী শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কারখানা কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ প্রয়োজন। কর্মস্থল থেকে বাড়ি ফেরার পথে নিরাপত্তা বাড়ানো, সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন এবং দ্রুত বিচার নিশ্চিত করা জরুরি।
শেষ কথা
এই ঘটনায় ন্যায়বিচার পাওয়া পর্যন্ত ভুক্তভোগী পরিবারের পাশে দাঁড়ানো আমাদের সকলের নৈতিক দায়িত্ব। শুধু আইন প্রয়োগকারী সংস্থাই নয়, সমাজের প্রতিটি মানুষকে নারী নিরাপত্তার বিষয়ে সচেতন হতে হবে। আশা করা যায়, দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।
আরও পড়ুন: মাগুরায় মানসিক প্রতিবন্ধী কিশোরী ধর্ষণ: নৃশংসতার আরেক অধ্যায়
#নারীনিরাপত্তা #গাজীপুর #ধর্ষণবিরোধীআন্দোলন #ন্যায়বিচার