বিএনপি নেতা রুহুল কবীর রিজভীর সতর্কবার্তা
রংপুরে এক অনুষ্ঠানে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী আনুপাতিক ভোট পদ্ধতির তীব্র সমালোচনা করেছেন। তাঁর মতে, এই পদ্ধতিতে স্থানীয় নেতৃত্বের বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয় এবং এটি গণতন্ত্রের মূল চেতনার পরিপন্থী।
আনুপাতিক ভোট কী? কেন এ নিয়ে বিতর্ক?
আনুপাতিক ভোট পদ্ধতিতে ভোটাররা সরাসরি কোনো ব্যক্তিকে নয়, দলকে ভোট দেয়। পরে দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এমপি নির্বাচিত হয়। রিজভীর মতে, এটি স্থানীয় নেতৃত্বকে দুর্বল করে দেয়। তিনি বলেন, “নেতা তৈরি হয় জনগণের সেবা ও সংগ্রামের মধ্য দিয়ে। কিন্তু আনুপাতিক পদ্ধতিতে দল যাকে ইচ্ছা তাকে এমপি বানাবে, যা স্বৈরাচারের পথ প্রশস্ত করবে।”
স্থানীয় নেতৃত্বের সংকট
রিজভী জোর দিয়ে বলেন, “একজন নেতা দীর্ঘদিন ধরে এলাকার মানুষের সমস্যা নিয়ে কাজ করেন। কিন্তু আনুপাতিক পদ্ধতিতে দলীয় নেতৃত্বই সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করবে, যা গণতন্ত্রের জন্য বিপজ্জনক।” তাঁর যুক্তি, এই ব্যবস্থায় স্থানীয় পর্যায়ে নেতৃত্ব গড়ে ওঠার সুযোগ কমে যায়।
গণতন্ত্র রক্ষায় বিএনপির অবস্থান
বিএনপি নেতা দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়েও কঠোর ভাষায় কথা বলেন। তিনি বলেন, “গত ১৬ বছর ধরে তরুণরা শান্তিতে ঘুমাতে পারেনি। গুম, খুন, নির্যাতন নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছিল।” তাঁর মতে, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য সব গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
নেতাকর্মীদের প্রতি নির্দেশ
রিজভী বিএনপির নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, “আমাদেরকে জনগণের পাশে থাকতে হবে। চাঁদাবাজি, জবরদখলের মতো অপকর্ম থেকে দূরে থাকতে হবে। বিএনপি যেন ন্যায়বিচার ও শান্তির প্রতীক হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।”
গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ
তিনি আরও যোগ করেন, “গণতন্ত্রে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা থাকবে, কিন্তু দেশের বৃহত্তর স্বার্থে সবাইকে এক হতে হবে। বিএনপি গুম-খুনের মধ্যেও ঐক্য ধরে রেখেছে, কারণ আমরা গণতন্ত্রের জন্য আপসহীন।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন
এই অনুষ্ঠানে বিএনপির বিভিন্ন শাখার নেতারা উপস্থিত ছিলেন, যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক দলের ভাইস প্রেসিডেন্ট ডা. জাহিদ হোসেন, ছাত্রদলের নেতা ডা. আউয়াল এবং রংপুর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মাহফুজ উন নবী ডন।
সর্বোপরি
আনুপাতিক ভোট পদ্ধতি নিয়ে বিতর্ক চলবেই। তবে রিজভীর বক্তব্যে স্পষ্ট, বিএনপি চায় স্থানীয় নেতৃত্বের বিকাশ এবং সরাসরি ভোটের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করা। আগামী দিনে এই বিতর্ক রাজনীতির গতিপথ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
আরও পড়ুন: সামাজিক মিডিয়ায় বিতর্কিত মন্তব্য: চাকরি হারালেন সাবেক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট
আপনার মতামত কী? আনুপাতিক ভোট পদ্ধতি নিয়ে আপনি কী ভাবেন? কমেন্টে জানান।