যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টে বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে। শুক্রবার, ট্রাম্প প্রশাসন ১,৩০০-এর বেশি কর্মীকে ছাঁটাই করার ঘোষণা দিয়েছে, যা আমেরিকার পররাষ্ট্রনীতি ও বৈশ্বিক অবস্থান নিয়ে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। সমালোচকরা বলছেন, এই সিদ্ধান্ত দেশের কূটনৈতিক শক্তিকে দুর্বল করে দেবে এবং ভবিষ্যতে বৈশ্বিক হুমকি মোকাবিলায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সক্ষমতা কমিয়ে দিতে পারে।
কাদের ছাঁটাই করা হচ্ছে?
একজন ঊর্ধ্বতন স্টেট ডিপার্টমেন্ট কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, এই ছাঁটাইয়ের মধ্যে রয়েছে:
১,১০৭ জন বেসামরিক কর্মচারী (দেশে নিযুক্ত)
২৪৬ জন বিদেশি সেবা কর্মকর্তা
ছাঁটাই হওয়া কর্মীদের কাছে পাঠানো নোটিশে বলা হয়েছে, তাদের পদ ‘বিলুপ্ত’ করা হয়েছে এবং তাদের অফিসের প্রবেশাধিকার, ইমেইল ও শেয়ারড ড্রাইভ ব্যবহারের সুযোগ বন্ধ করে দেওয়া হবে।
প্রতিক্রিয়া ও প্রতিবাদ
ছাঁটাইয়ের খবর ছড়িয়ে পড়ার পরেই স্টেট ডিপার্টমেন্ট সদর দপ্তরের বাইরে জড়ো হন প্রাক্তন সহকর্মী, কূটনীতিক, কংগ্রেস সদস্য ও সমর্থকরা। তারা ‘আমেরিকার কূটনীতিকদের ধন্যবাদ’ এবং ‘আমরা সবাই আরো ভালো কিছুর যোগ্য’— এমন বার্তা সম্বলিত প্ল্যাকার্ড হাতে প্রতিবাদ জানান।
অনেকেই এই সিদ্ধান্তকে ‘প্রাতিষ্ঠানিক স্মৃতিশক্তি হারানো’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। সাবেক স্টেট ডিপার্টমেন্ট কর্মকর্তা অ্যান বোডিন বলেন, “আমরা সামরিক বাহিনীর সদস্যদের কথা বলি, কিন্তু পররাষ্ট্র সেবার কর্মীরাও দেশের জন্য শপথ নেন। যারা আমেরিকার স্বার্থে কাজ করেছেন, তাদের সঙ্গে এমন আচরণ ন্যায্য নয়।”
ছাঁটাইয়ের কারণ ও সম্ভাব্য প্রভাব
ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এটি একটি ‘কার্যকরী ও সাশ্রয়ী পুনর্গঠন’ প্রক্রিয়া। তবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই সিদ্ধান্তের পেছনে রাজনৈতিক ও নীতিগত কারণ থাকতে পারে।
সম্ভাব্য প্রভাব:
কূটনৈতিক সম্পর্কে টানাপোড়েন: বিদেশে মার্কিন মিশনগুলো দুর্বল হতে পারে।
সাইবার নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা কার্যক্রমে ঘাটতি: বিশেষজ্ঞ কর্মীদের চলে যাওয়ায় তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণে সমস্যা দেখা দিতে পারে।
আন্তর্জাতিক মঞ্চে আমেরিকার অবস্থান: জাতিসংঘ, ন্যাটো ও অন্যান্য ফোরামে মার্কিন প্রভাব কমে যাওয়ার আশঙ্কা।
কী বলছে সমালোচকরা?
ডেমোক্র্যাট নেতারা এই সিদ্ধান্তকে ‘অদূরদর্শী ও বিপজ্জনক’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। তাদের মতে, বৈশ্বিক সংকট মোকাবিলায় কূটনৈতিক সমাধান অপরিহার্য, এবং এই ছাঁটাই তা বাধাগ্রস্ত করবে।
শেষ কথা
ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত আমেরিকার পররাষ্ট্রনীতিতে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে পারে। তবে এটি কি দেশের জন্য ইতিবাচক নাকি নেতিবাচক— তা সময়ই বলবে। একদিকে প্রশাসনের দাবি, এটি একটি প্রয়োজনীয় সংস্কার; অন্যদিকে সমালোচকরা মনে করছেন, এটি আমেরিকার বৈশ্বিক নেতৃত্বকে দুর্বল করবে।
আরও পড়ুন: পুরান ঢাকায় হত্যা: বিএনপির অঙ্গসংগঠন থেকে ৪ নেতা বহিষ্কার
আপনার কী মনে হয়? এই ছাঁটাই কি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ভালো নাকি খারাপ? কমেন্টে জানান!