গোপনে বিমানে উঠলেন কিভাবে? কী ছিল প্রটোকল? কোথায় যাচ্ছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ?
জনরোষের ভয়ে সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ দেশ ছেড়ে গেছেন—তাও ছদ্মবেশে! গত বুধবার মধ্যরাতে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ঘটে এক অদ্ভুত ও রহস্যময় ঘটনা। রাত পৌনে ১টার দিকে ভিআইপি গেটে প্রবেশ করেন লুঙ্গি-গেঞ্জি পরা, মুখে মাস্ক লাগানো এক ব্যক্তি। পরবর্তীতে জানা যায়, তিনি আর কেউ নন—সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ নিজেই!
ছদ্মবেশে ভিআইপি লাউঞ্জে প্রবেশ
সূত্রমতে, নির্ধারিত সময়ে হামিদের ব্যক্তিগত গাড়ি পৌঁছায় বিমানবন্দরের ভিআইপি গেটে। নিরাপত্তা কর্মীরা গাড়ি থামালে চালক জানান, “সাবেক রাষ্ট্রপতির পরিবার গাড়িতে আছেন।” পরে গোয়েন্দা সংস্থার হস্তক্ষেপে হামিদকে গেট দিয়ে ভেতরে নেওয়া হয়। জানা যায়, গাড়িতেই তিনি পোশাক পরিবর্তন করে প্যান্ট-শার্ট পরেন।
নিরাপত্তা তল্লাশি এড়ালেন কীভাবে?
তিনি কোনো সাধারণ যাত্রীর মতো ইমিগ্রেশন কিংবা সিকিউরিটি চেকের মধ্য দিয়ে যাননি। সরাসরি তাকে বিমানে তোলা হয়। এসময় তিনি ব্যবহার করেন একটি কূটনৈতিক পাসপোর্ট—নম্বর D00010015, যা বৈধ রয়েছে ২০৩০ সাল পর্যন্ত। প্রশ্ন উঠেছে, যেখানে শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে অনেকের লাল পাসপোর্ট বাতিল হয়েছে, সেখানে আবদুল হামিদেরটি বহাল থাকলো কীভাবে?
লাল পাসপোর্টের সুবিধা
ভিসা ছাড়া বহু দেশে ভ্রমণের সুযোগ
কূটনৈতিক ইমিউনিটি
বিমানবন্দরে প্রটোকল ও ফাস্ট ট্র্যাক সুবিধা
পাসপোর্ট অফিস সূত্রে জানা গেছে, সাবেক রাষ্ট্রপতিদের বিচারপতির মর্যাদা দেওয়া হয় বলে তার কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিল করা হয়নি।
আসল গন্তব্য কোথায়?
যদিও টিকিট অনুযায়ী গন্তব্য ছিল ব্যাংকক, তবে একাধিক সূত্র বলছে, তিনি গেছেন দিল্লি। ১৬ জুন ফেরার টিকিট কনফার্ম থাকলেও তিনি আদৌ ফিরবেন কি না, তা নিশ্চিত নয়।
গোপনীয়তার কারণ কী?
জনরোষের ভীতি: বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে জনগণের মধ্যে তার প্রতি অসন্তোষ থাকতে পারে।
নিয়ম লঙ্ঘন: বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে আগাম না জানিয়ে ভিআইপি প্রটোকল ব্যবহার করা হয়েছে।
রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা?: প্রশ্ন উঠেছে—সরকার কি তাকে গোপনে নিরাপদে বেরিয়ে যেতে সাহায্য করেছে?
বিমানবন্দর কর্মীর মন্তব্য
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, “সবকিছু পূর্বপরিকল্পিত ছিল। আমরা কেবল নির্দেশ পালন করেছি।”
মূল প্রশ্ন: গোপন দেশত্যাগ কি গণতন্ত্রের জন্য হুমকি?
একজন সাবেক রাষ্ট্রপতি যদি ছদ্মবেশে দেশ ত্যাগ করেন, তাহলে প্রশ্ন ওঠে—এটি কি স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার পরিপন্থী নয়? নাকি শুধুই একটি নিরাপত্তামূলক পদক্ষেপ?
আরও পড়ুন: সীমান্ত উত্তেজনা: নিয়ন্ত্রণরেখায় পাকিস্তানের গোলাবর্ষণে ১০ ভারতীয় নিহত
📢 আপনার মতামত জানাতে ভুলবেন না! মন্তব্য করুন নিচে।