বিনোদন জগতে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে অভিনেতা শামীম হাসান সরকারের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ। সহশিল্পী অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা প্রিয়া তাকে ধর্ষণের হুমকি, মাদক সেবন এবং শারীরিক সহিংসতার দায়ে অভিযুক্ত করেছেন। এই ঘটনায় সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম নিয়েছে। তবে শামীম হাসান সরকার সকল অভিযোগকে অস্বীকার করেছেন এবং নিজের পক্ষে সাফাই গেয়েছেন।
প্রিয়াঙ্কা প্রিয়ার অভিযোগ কী?
প্রিয়াঙ্কা প্রিয়া দাবি করেছেন, শুটিং সেটে শামীম হাসান সরকার তাকে যৌন হয়রানি ও ধর্ষণের হুমকি দিয়েছেন। এছাড়াও তিনি অভিযোগ করেছেন, শামীম মাদক সেবন করেন এবং একপর্যায়ে তার গায়ে হাত তুলেছেন। এই অভিযোগের প্রেক্ষাপটে বিনোদন মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেকে শামীমের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন, আবার অনেকে সত্যতা যাচাইয়ের আগেই তাকে দোষারোপ না করার পরামর্শ দিচ্ছেন।
শামীম হাসানের জবাব: “সব অভিযোগ মিথ্যা”
মঙ্গলবার (৬ মে) রাতে শুটিং সেট থেকেই শামীম হাসান সরকার একটি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেন। তিনি দৃঢ়ভাবে বলেছেন, “আমি কখনোই কোনো সহশিল্পীকে যৌন হয়রানি বা ধর্ষণের হুমকি দিইনি। এ ধরনের অভিযোগ সম্পূর্ণ বানোয়াট।”
মাদক সেবনের অভিযোগের জবাব
প্রিয়াঙ্কার মাদক সেবনের অভিযোগকে গুরুতর আখ্যা দিয়ে শামীম বলেন, “আমার বিরুদ্ধে মাদক সেবনের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। দোলনচাঁপা শুটিং হাউসে সর্বত্র সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে। কেউ চাইলে ফুটেজ দেখে নিতে পারেন। যদি কেউ প্রমাণ করতে পারে যে আমি মাদক সেবন করেছি, আমি তখনই মিডিয়া জগৎ ছেড়ে দেব।”
শারীরিক সহিংসতার অভিযোগ খণ্ডন
প্রিয়াঙ্কার আরেকটি অভিযোগ ছিল, শামীম তার গায়ে হাত তুলেছেন। এ বিষয়ে শামীম বলেন, “আমার ১০ বছরের অভিনয় জীবনে আমি কখনো কারো ওপর হাত তুলিনি। আমার পরিবারে মা-বোন আছেন, আমি সম্প্রতি বিয়েও করেছি। এমন অভিযোগ আমার বিরুদ্ধে উত্থাপন করা নিছক ষড়যন্ত্র।”
আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি
শামীম হাসান সরকার জানিয়েছেন, প্রিয়াঙ্কা প্রিয়ার বিরুদ্ধে তিনি আইনি পদক্ষেপ নিতে পারেন। তিনি বলেন, “একটি মিথ্যা অভিযোগ আমার ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। তাই আমি পরিবার, সহশিল্পী এবং সংশ্লিষ্ট সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করে আইনি ব্যবস্থা নেব।”
কী বলছে নেটিজেনরা?
সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ঘটনা নিয়ে নানা মতামত উঠে আসছে। কেউ কেউ প্রিয়াঙ্কার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন, আবার অনেকেই শামীমের পক্ষে সওয়াল করছেন। অনেকে বলছেন, অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হওয়ার আগে কাউকে দোষী সাব্যস্ত করা উচিত নয়।
বিনোদন শিল্পে নারী নিরাপত্তা
এই ঘটনা বাংলাদেশের বিনোদন শিল্পে নারীদের নিরাপত্তা ও সম্মান নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। অনেকেই বলছেন, শুটিং সেট বা কর্মক্ষেত্রে নারী শিল্পীদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে কঠোর নীতিমালা প্রণয়ন করা দরকার।
সবশেষ অবস্থা
এই মুহূর্তে ঘটনাটি তদন্তাধীন নয়, তবে শামীম হাসান সরকার আইনি লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। অন্যদিকে, প্রিয়াঙ্কা প্রিয়াও তার বক্তব্যে অনড়। এই বিতর্কের সমাধান আদালত বা শিল্প সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হাতেই ছেড়ে দেওয়া হতে পারে।
শেষ কথা
যেকোনো অভিযোগের সত্যতা যাচাই করা জরুরি। অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা প্রিয়ার অভিযোগ গুরুত্বপূর্ণ, আবার শামীম হাসান সরকারের প্রতিবাদও আমলে নেওয়া দরকার। আশা করা যায়, সত্য ও ন্যায়ের পক্ষেই শেষ কথা হবে।
আরও পড়ুন: মডেল মেঘনা আলমের গ্রেফতার: বিস্তারিত জানুন
আপনার মতামত কী? নিচে কমেন্ট করে জানান, এই বিতর্কে আপনি কার পক্ষে এবং কেন?