সম্প্রতি দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় এক মর্মান্তিক ঘটনা সমগ্র দেশকে নাড়া দিয়েছে। মাত্র ৯ বছর বয়সী এক স্কুলছাত্রীকে নির্মমভাবে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক যুবকের বিরুদ্ধে। এই নৃশংস ঘটনায় শুধু শিশুটির জীবনই বিপর্যস্ত হয়নি, তার পরিবারও মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করলেও এখন পর্যন্ত সে ও তার পরিবার পলাতক।
ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ
ঘটনাটি ঘটেছে খানসামা উপজেলার টংগুয়া কছির পাড়া এলাকায়। ৯ বছর বয়সী শিশুটি স্থানীয় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী। রোববার (৯ জুন) বিকেলে শিশুটির বাবা-মা বাড়ির পাশের চাতালে ধান ও খড় শুকানোর কাজে ব্যস্ত ছিলেন। এ সময় শিশুটি আশেপাশের বাচ্চাদের সঙ্গে খেলছিল।
হঠাৎ পানির তৃষ্ণা পেলে শিশুরা অভিযুক্ত নুরুন্নবী ইসলামের (২১) বাড়িতে যায়। সেখানে সুযোগ পেয়ে নুরুন্নবী শিশুটিকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। পরে তাকে অচেতন অবস্থায় ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। শিশুটির বাবা-মা ঘটনা টের পেয়ে তাকে উদ্ধার করে নীলফামারী সদর হাসপাতালে নিয়ে যান।
অভিযুক্তের পলায়ন ও মামলা
ঘটনার পর অভিযুক্ত নুরুন্নবী এবং তার পরিবারের সদস্যরা পালিয়ে যায়। শিশুটির মা মঙ্গলবার (১০ জুন) খানসামা থানায় মামলা দায়ের করেন। এজাহারে নুরুন্নবী, তার বাবা-মা ও ভাইকে আসামি করা হয়েছে।
ভুক্তভোগীর মা বলেছেন, “আমার কোমলমতি মেয়ের উপর এই পাশবিক অত্যাচার কখনোই মেনে নেওয়া যায় না। আমি চাই, দোষীদের কঠোর শাস্তি হোক।”
পুলিশের তদন্ত ও ব্যবস্থা
খানসামা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, মামলাটি রুজু করা হয়েছে এবং অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারে তদন্ত চলছে।
সমাজের করণীয়
এ ধরনের ঘটনা শুধু একটি পরিবারকে ধ্বংস করে না, সমাজের মৌলিক চিন্তাভাবনাকেও প্রশ্নের মুখে ফেলে। শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে:
সচেতনতা বৃদ্ধি: অভিভাবকদের উচিত শিশুদের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করা এবং তাদের নিরাপত্তা সম্পর্কে সচেতন করা।
দ্রুত বিচার নিশ্চিত করা: ধর্ষণ ও শিশু নির্যাতনের মামলাগুলো দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে নিষ্পত্তি করা প্রয়োজন।
কঠোর শাস্তি: ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
শেষ কথা,
দিনাজপুরের এই ঘটনা আমাদের আবারও মনে করিয়ে দিয়েছে যে, শিশুদের নিরাপত্তা এখনো পুরোপুরি নিশ্চিত হয়নি। শুধু আইন প্রয়োগ করেই নয়, সামাজিক সচেতনতা ও নৈতিক শিক্ষার মাধ্যমেও এই ধরনের অপরাধ রোধ করতে হবে। আশা করি, দোষীরা শীঘ্রই গ্রেপ্তার হবে এবং বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াবে।
আরও পড়ুন: ভুয়া মেজর সেজে নারী চিকিৎসক’কে ধর্ষণ | অভিযুক্ত গ্রেফতার