ঢাকার একটি আদালত গায়ক মাঈনুল আহসান নোবেলকে ধর্ষণ মামলার বাদীর সঙ্গে বিয়ে করার অনুমতি দিয়েছেন। নোবেল বর্তমায় কারাগারে আটক রয়েছেন, এবং তাঁর পক্ষ থেকে আদালতে বিবাহের জন্য বিশেষ আবেদন করা হয়েছিল। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট নাজমিন আক্তার বুধবার এই আবেদন মঞ্জুর করেন।
কী ঘটেছিল মামলায়?
গত ১৯ মে নোবেলের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়। অভিযোগ ছিল, তিনি এক তরুণীকে সাত মাস ধরে আটকে রেখে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেছেন। এছাড়াও ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণের অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।
মামলার বাদী দাবি করেন, নোবেলের সঙ্গে তাঁর ফেসবুকে পরিচয় হয়েছিল ২০১৮ সালে। পরে ২০২৩ সালের নভেম্বরে নোবেল তাকে ডেমরায় নিজের স্টুডিওতে ডেকে নিয়ে গেলে ঘটনাটি ঘটে। অভিযোগ অনুযায়ী, নোবেল তাঁর মোবাইল ফোন কেড়ে নেন, তাকে আটকে রাখেন এবং ধর্ষণের ভিডিও তৈরি করেন। পরে এই ভিডিও ভাইরাল হলে নারীর পরিবার তাকে উদ্ধার করে এবং মামলা দায়ের করে।
আদালতে বিবাহের আবেদন
নোবেলের আইনজীবী জসীম উদ্দিন আদালতে দাবি করেন যে, বাদী আসলে নোবেলের স্ত্রী এবং ধর্ষণের অভিযোগটি মিথ্যা। তবে আদালতে বিয়ের কোনো প্রমাণপত্র (কাবিননামা) জমা দেওয়া সম্ভব হয়নি। এরপর নোবেলের পক্ষ থেকে আদালতে বিবাহের জন্য আনুষ্ঠানিক আবেদন করা হয়।
বাদীও আদালতে উপস্থিত হয়ে তাঁর সম্মতি দেন। উভয় পক্ষের সম্মতিতে আদালত নোবেলকে বিবাহের অনুমতি দেন এবং কারা কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন।
তদন্তে কী পাওয়া গেছে?
পুলিশের তদন্তে নোবেল ও বাদীর মধ্যে কোনো বৈধ বিয়ের রেজিস্ট্রেশন পাওয়া যায়নি। যদিও নোবেলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল যে, তাঁদের মৌখিক বিয়ে হয়েছে, কিন্তু এর কোনো আইনি প্রমাণ নেই।
ডেমরা থানার তদন্ত কর্মকর্তা মো. মুরাদ হোসেন জানান, নোবেল অভিযুক্ত নারীকে দীর্ঘদিন আটকে রেখেছিলেন এবং ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে তাকে হয়রানি করা হয়েছিল।
সমাজে প্রতিক্রিয়া
এই ঘটনাটি নারী অধিকার ও বিচার ব্যবস্থা নিয়ে নতুন বিতর্ক তৈরি করেছে। অনেকের মতে, আদালতের এই সিদ্ধান্ত ন্যায়বিচারের ক্ষেত্রে একটি জটিল প্রশ্ন রেখেছে। অন্যদিকে, কিছু মানুষ মনে করেন যে, যদি দু’পক্ষেরই সম্মতি থাকে, তবে বিয়ের অনুমতি দেওয়া যেতে পারে।
সামনের পদক্ষেপ
এখন নোবেলের বিয়ের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে মামলাটির পরিণতি কী হবে, তা নিয়ে আইনি বিশ্লেষকদের মধ্যে আলোচনা চলছে। আদালতের এই সিদ্ধান্তের পর মামলার গতি-প্রকৃতি কেমন হবে, তা ভবিষ্যতেই স্পষ্ট হবে।
এই ঘটনা আমাদের সমাজে নারী নির্যাতন, আইনের প্রক্রিয়া এবং বিচার ব্যবস্থার জটিলতা নিয়ে ভাবনার সুযোগ দিচ্ছে। আপনার মতামত কি? কমেন্টে জানান।
আরও পড়ুন: আম খাওয়ানোর লোভ দেখিয়ে ৬ বছরের শিশুকে ধর্ষণ