চট্টগ্রামে এক মর্মান্তিক ঘটনায় এক নারীকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। গত রাতে বায়েজিদ বোস্তামী থানার রৌফাবাদ এলাকায় এক ভবনের নবম তলায় এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। নিহত নারীর নাম ফাতেমা বেগম (৩২)। তাঁর স্বামী মো. সুমনকে ঘটনার পর থেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। পুলিশের ধারণা, স্বামীই এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা।
কী ঘটেছিল?
ঘটনার রাতটি ছিল ভয়াবহ। গভীর রাতে ফাতেমা বেগমকে তাঁর বাসায় ছুরি ও চাপাতি দিয়ে আঘাত করে হত্যা করা হয়। শুধু তাই নয়, খুনি তাঁর দেহটি ১১টি টুকরো করে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ফাতেমার শরীরের হাড় থেকে মাংস পর্যন্ত কেটে আলাদা করা হয়েছে, যা এই হত্যাকাণ্ডকে আরও ভয়ঙ্কর করে তুলেছে।
পুলিশের অভিযান ও তদন্ত
বায়েজিদ বোস্তামী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ কামরুজ্জামান জানিয়েছেন, রাতেই খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, এই হত্যাকাণ্ড পরিকল্পিত ও ঠান্ডা মাথায় সংঘটিত হয়েছে।
দাম্পত্য কলহই কি কারণ?
ওসি কামরুজ্জামানের বক্তব্য অনুযায়ী, ফাতেমা ও সুমনের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক কলহ চলছিল। ১০ বছর আগে তাদের বিয়ে হয় এবং তাদের একটি ৮ বছর বয়সী সন্তান রয়েছে। ঘটনার সময় সন্তানটি আত্মীয়ের বাড়িতে ছিল। পুলিশের ধারণা, এই কলহই হত্যাকাণ্ডের পেছনে মূল কারণ হতে পারে।
স্বামী সুমন কেন পলাতক?
ঘটনার পর থেকেই সুমন নিখোঁজ। পুলিশের ধারণা, তিনি এই হত্যাকাণ্ডের পর পালিয়ে গেছেন। পুলিশ তাঁর সন্ধানে তল্লাশি চালাচ্ছে। সুমন পেশায় একজন পিকআপ চালক ছিলেন বলে জানা গেছে।
সমাজে নারীর নিরাপত্তা প্রশ্নের মুখে
এ ধরনের নৃশংস ঘটনা সমাজে নারীর নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। কেন একজন নারী তাঁর নিজ ঘরেই এতটা নিষ্ঠুরতার শিকার হলেন? পারিবারিক সহিংসতা ও দাম্পত্য কলহের পরিণতি কতটা ভয়াবহ হতে পারে, এই ঘটনা তারই ইঙ্গিত দেয়।
পরবর্তী পদক্ষেপ কী?
পুলিশ এই মামলায় দ্রুত তদন্ত চালাচ্ছে এবং সুমনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে। এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সমাজের সচেতনতা জরুরি।
আরও পড়ুন: নাসিরনগরে সহিংসতা: ছাত্রদল নেতার মৃত্যুতে অস্থিরতা, শতাধিক পরিবার গৃহহারা
এই হত্যাকাণ্ডের বিচার দ্রুত হওয়া উচিত, যাতে নিহত ফাতেমা বেগমের আত্মা শান্তি পায় এবং ভবিষ্যতে এমন নৃশংসতা রোধ করা যায়।